স্বাস্থ্য

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর পরিসংখ্যানে সর্বোচ্চ রেকর্ড

২০০২ সালে সর্বোচ্চ ৬ হাজার আক্রান্ত হওয়ার রেকর্ড ছিল।

চলতি বছর শেষ হতে এখনো এক মাসেরও বেশি সময় বাকি। ইতোমধ্যে দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর পরিসংখ্যানে সর্বোচ্চ রেকর্ড ছুঁয়েছে। এ বছর সাত সহস্রাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার নতুন রেকর্ড হয়েছে। এর আগে ২০০২ সালে সর্বোচ্চ ৬ হাজার আক্রান্ত হওয়ার রেকর্ড ছিল। তবে ডেঙ্গুজনিত মৃতের সংখ্যায় এখনো ২০০০ সালের ৯৩ জনের মৃত্যুর রেকর্ডই সর্বাধিক। চলতি মৌসুমে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২০ জনের মতো মারা গেছেন।

যদিও এ তথ্য পুরো রাজধানীর চিত্র নয়। কারণ এ তথ্য শুধু রাজধানীর ১৩টি সরকারি হাসপাতাল এবং ৩৬টি বেসরকারি হাসপাতালের। এ ছাড়া ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে অনেক রোগী হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শে বাসায় রেখে চিকিৎসা করাচ্ছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, গত ১৮ বছরের মধ্যে এবারই ডেঙ্গুর ভয়াবহতা সবচেয়ে বেশি। এর অন্যতম কারণ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুপস্থিতি। সূত্রে জানা গেছে, ২০০০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দেড় যুগে প্রায় ৪৫ হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। এ সময়ে মোট ২৮৪ জনের মৃত্যু হয়।

প্রতি বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০০০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা তুলে ধরা হলো। ২০০০ সালে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৫৫১ জন এবং মারা গেছেন ৯৩ জন, ২০০১ সালে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৪৩০ জন এবং মারা গেছেন ৪৪ জন, ২০০২ সালে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ২৩২ জন এবং মারা গেছেন ৫৮ জন, ২০০৩ সালে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮৬ জন এবং মারা গেছেন ১০ জন, ২০০৪ সালে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৪৩৪ জন এবং মারা গেছেন ১৩ জন, ২০০৫ সালে আক্রান্ত হয়েছেন ১০৪৮ জন এবং মারা গেছেন ৪ জন, ২০০৬ সালে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ২০০ জন এবং মারা গেছেন ১১ জন, ২০০৭ সালে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৬৬ জন এবং কেউ মারা যাননি, ২০০৮ সালে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ১৫৩ জন এবং কেউ মারা যাননি, ২০০৯ সালে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭৪ জন এবং কেউ মারা যাননি, ২০১০ সালে আক্রান্ত হয়েছেন ৪০৯ জন এবং কেউ মারা যাননি, ২০১১ সালে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩৫৯ জন এবং মারা গেছেন ৬ জন, ২০১২ সালে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৭১ জন এবং মারা গেছেন ১ জন, ২০১৩ সালে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৭৪৯ জন এবং মারা গেছেন ২ জন, ২০১৪ সালে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭৫ জন এবং কেউ মারা যাননি, ২০১৫ সালে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ১৬২ জন এবং মারা গেছেন ৬ জন, ২০১৬ সালে আক্রান্ত হয়েছেন ৬০৬০ জন এবং মারা গেছেন ১৪ জন এবং ২০১৭ সালে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৭৬৯ জন এবং মারা গেছেন ৮ জন ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, এক দশক পরপর ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ে। ২০০০ থেকে ২০০২ সাল এ তিন বছরে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ছিল সর্বাধিক। ২০০৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা এবং এর ফলে মৃতের সংখ্যা ছিল তুলনামূলক কম। এরপর ২০১৫ সাল থেকে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে থাকে। গত চার বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেড়েছে। যেভাবে মৃত্যুর সংখ্যা গত চার বছরে বাড়ছে তা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে আগামী দিনগুলোয় এটি মহামারী আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button