বগুড়া সদর উপজেলা

ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ২০ কিলোমিটার রাস্তা যেন মৃত্যুপুরি



শুধু বগুড়া বা শেরপুরেই নয় দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে তিন চাকার সিএনজি সহ ছোট, বড়, মাঝারি সবধরনের যানবাহনই ব্যস্ত মহাসড়কে চলাচল করার সময় মহাসড়কের পার্শ্বে রাস্তা বা ফুটপাতে আবার ফুটপাত থেকে মহাসড়কে উঠানামা করতে থাকে। আর এই উঠানামার জায়গাগুলোতে ব্যবহৃত বিট বা রোড ডিভাইডার বিপদজনক অসমতলতা ও ফুটপাত থেকে মহাসড়কের চিহ্নিত উচ্চতা মারাক্তক ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভারী যানবাহন উল্টে প্রায়ই মারাক্তক দুর্ঘটনা ঘটে প্রাণ হারাচ্ছে অগনিত মানুষ।


বিশেষ করে মটরসাইকেলের জন্য কুচিপাথর, মহাসড়ক ও ফুটপাতের মধ্যে এই চিহ্নিত বীট বা রোড ডিভাইডার যেন মরণফাঁদ পেতে বসে আছে। মটর সাইকেলগুলো ব্যস্ত মহাসড়কে চলাচল করার সময় সামনে বড় গাড়ি আথবা দ্রুত গতির গাড়ি দেখলে খুব সহজেই পার্শ্বে রাস্তা ফুটপাতে নামিয়ে দেয়। কিন্তু ফুটপাত থেকে মহাসড়কে উঠার সময় ব্যবহৃত রোড ডিভাইডারের অস্বাভাবিক উচ্চতার কারণে সবধরনের ভারী যানবাহনের জন্য বিশেষ করে মোটর সাইকেল দুই চাকা বিশিষ্ট হওয়ায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনার মুখোমুখি হচ্ছেন মোটর সাইকেল আরোহীরা। কারণ চলতি অবস্থায় থাকা মোটরসাইকেল ফুটপাত থেকে মহাসড়কে উঠতে ব্যবহৃত রোড ডিভাইডারের অস্বাভাবিক উচ্চতা ও কুচিপাথর অতিক্রম করতে স্লিপ (ঝষরঢ়) করে ব্যস্ত মহাসড়কে প্রাণ হারাচ্ছে বহু মানুষ।
শেরপুর উপজেলার অধীনে শেরুয়া বটতলা থেকে ছোনকা বাজার ও ঘোগা বটতলা মহাসড়কে নিয়মিত চলাচলকারী বেশ কিছু মটর সাইকেল ও ট্রাক চালকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শেরুয়া বটতলা থেকে ঘোগা বটতলা যাওয়ার পথে ঐদিকে ঘোগা বটতলা সহ কিষ্টপুর গ্রামের পুরাতন মসজিদ সংলগ্ন মহাসড়ক, মির্জাপুর থেকে শেরুয়া বটতলা আসার পথে হাওয়াখানা তৌহিদ ফিলিং স্টেশন থেকে শেরুয়া বাজারের আগ পর্যন্ত সরকারি মৎস প্রশিক্ষণ ও সম্প্রসারণ কেন্দ্র সংলগ্ন মহাসড়ক ও পার্শ্বে রাস্তার অসমতলতা যেন ভয়ঙ্কর বিপদজনক পরিস্থিতে আছে। এবং এই রাস্তাটিতে মাঝে মাঝেই মোটর সনাইকেল ও ভারী যানবাহনগুলোর চাকা বাস্ট হয়ে বা ফেঁটে উল্টেগিয়ে দুর্ঘটনার মুখোমুখি হচ্ছে যানবাহন যাত্রি ও পথচারী।


এদিকে নয়মাইলের কিছু দুর্ঘটনা পয়েন্ট সহ শেরপুর ব্যাসস্টান্ড ব্রাক ব্যাংক থেকে কলেজরোডের শেরউড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল পর্যন্ত রাস্তার দুই পার্শ্বে নিচু ও মহাসড়কের উচ্চতার সাথে রাস্তা বা রোড ডিভাইডারের অসমতল প্রায় ৬ টি স্থান অধিক ঝুকিপূর্ণ স্থান হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। যেমন- উপজেলা মজিবর রহমান মজনু উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের উত্তর পার্শ্বের রাস্তা, উপজেলার পেট্রল পাম্প সংলগ্ন রাস্তা, শেরউড স্কুল সংলগ্ন রাস্তা এবং এই প্রতিবেদকের চোঁখের সামনেই আব্দুল রউফ নামের মোটর সাইকেল চালকের দুর্ঘটনায় পতিত হওয়া পেট্রল পাম্প সংলগ্ন রাস্তা।


দুর্ঘটনার কবলে পড়া আব্দুল রউফ নামের এই ব্যক্তি নয় মাইল থেকে আসছিলেন উপজেলার টিএমএসএস অফিসে, তিনিও একই ভাবে উপজেলা গেইটের ৫০ ফুট আগে ফুটপাথ থেকে মহাসড়কে উঠতেই স্লিপ করে উল্টে পরেন। যদিও হালকা পায়ে আঘাত পাওয়া ছাড়া বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি কিন্তু বড় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা ছিল।
তিনি বলেন, এই দিনের বেলায় অধিক সতর্কতার সহিত চলাচল করার পরেও এই উচু রোড ডিভাইডার অতিক্রম করতে কিঞ্চিত কমবেশির কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে সন্ধায় বা রাতের বেলায় যখন সামনে আসা যানবাহনের আলোতে কম দেখা যায় তখন কি অবস্থা হতেপারে চিন্তা করে দেখেন।


এ বিষয়ে শেরপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী কর্মকর্তা মো. সিদ্দিক হোসেন বলেন, শেরপুর অডোটরিয়াম রোড থেকে শুরু করে মহিপুর এলাকা ব্যাপক দুর্ঘটনা প্রবন এলাকা বলে আমরা মনে করি তাই বেশ কয়েকটি সাইনবোর্ডও দেওয়া আছে।


তিনি বলেন, রাস্তাটি দুই দিকেই অধিক ঢালু ও মহাসড়কের সাথে পার্শ্বে রাস্তার সমতলতা না থাকায় ভারী যানবাহন, বাস, সিএনজি, মোটর সাইকেল সহ সবধরনের যান চলাচলের জন্য রাস্তাটি খুবই বিপদজনক।


তিনি প্রতিবেদককে জানান, গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এপর্যন্ত ১৩টি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ২৮ জন ও নিহত হয়েছেন ২ জন। এর মধ্যে ৫ টি মোটর সাইকেল দুর্ঘটনা ও ৮টি বাস-ট্রাক দুর্ঘটনা। যার মধ্যে অধিকাংশ দুর্ঘটনাই মহাসড়ক ও রাস্তার অসমতলতার কারণেই হয়েছে।


এ বিষয়ে বগুড়া সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামান প্রতিবেদককে বলেন, আগামী ৪/৫ মাসের মধ্যে ফোরলেনের কাজ শুরু হবে বলে আশা করছি। এবং আমরা মহাসড়ক ও রাস্তা বা ফুটপাতের চিহ্নিত ডিভাইড স্থানগুলো সব জায়গাতেই সমান করে দিয়ে থাকি। তবে বিপদজনক অসমতল জায়গাগুলো পরিদর্শন করে খুব তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সৌরভ অধিকারী শুভ

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button