ড্রাগন চাষে সফলতার শিখরে গাবতলীর রেজাউল করিম
গুটি কয়েক ফসল চাষাবাদের বৃত্ত ভেঙ্গে ভিন্ন এক আধুনিক কৃষি উদ্যোক্তা বগুড়া গাবতলী উপজেলার তেলকুপি গ্রামের মোঃ রেজাউল করিম।
যিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করার পর একটি বেসরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়ে স্বপ্ন দেখেন আধুনিক চাষাবাদে উদ্যোক্তা হওয়ার।
২০১৭ সালে নিজের বাবার রেখে যাওয়া জমিতে গড়ে তুলেছেন পুষ্টি সমৃদ্ধ ড্রাগণ ফল ও কমলা-মালটা বাগান। সাথে আছে পেঁপে, দেশি জাতের সাগর কলা, সবজি হিসাবে বাধাকপি, টমেটো সহ আরো অনেক মৌসুমি ফসল।
সরেজমিনে দেখা যায়, উদ্যোক্তা রেজাউল তার ৬০ শতাংশ জমি জুড়ে মালচিং পদ্ধতিতে ড্রাগন ফল চাষ করেছেন। মার্চ মাসে গাছে ফল আসতে শুরু করে এবং তা পরিপক্ব হতে ৫০-৫২ দিন সময় লাগে।
ড্রাগন চাষে মাটি উপযোগী হওয়ায় মৌসুমে তিনি ৬-৭ লক্ষ টাকার ফল বিক্রি করেন। সেগুলো তিনি বগুড়া সহ বিভিন্ন বাজারে পাইকারী ৩০০-৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। এমন কি বিভিন্ন ফল ব্যবসায়ী ফল পরিপক্ব হওয়ার পূর্বেই অর্ডার দিয়ে যায়। একই পরিমাণ একটি জমিতে তিনি মালটা ফলের চাষ করেন। মৌসুমের শুরু থেকে ফল পরিপক্ব পর্যন্ত তিনি লক্ষাধিক টাকার ফল বিক্রি করেন।
কিন্তু গত বছরের তুলনায় এবছর ফলন ভালো হলেও করোনার কারনে আশানুরূপ মূল্য না পাওয়ার শঙ্কা আছে বলে মনে করছেন এই উদ্যোক্তা।
শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ মোঃ সোহেল রানা বলেন, পুষ্টি গুণাগুণ সমৃদ্ধ এই ফল মানবদেহের জন্যও উপকারী। ড্রাগন একটি অধিক পুষ্টি গুণাগুণ সমৃদ্ধ ফলে অনেক ভেষজ ও ঔষধি গুণ রয়েছে। ড্রাগন ফলের খোসা ও বীজ মানবদেহের রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টরেল কমায় এবং হৃদযন্ত্র কে ভালো রাখে। ড্রাগন ফলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন সি থাকার কারনে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ক্যান্সার প্রতিরোধ করে এবং মানবদেহকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। ড্রাগন ফলে পটাশিয়াম উপাদান ডায়াবেটিস রোগীর হার্ট ও কিডনি সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। ড্রাগন ফলে ফাইবার থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
এছাড়াও খনিজ উপাদান যেমন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস থাকে যা হাঁড়ের ক্ষয় রোধ করে, স্নায়ুর কার্যকারিতা রক্ষা করে। প্রচুর আয়রন থাকার ফলে রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরী করে।
আধুনিক কৃষি কাজে সফলতার জন্য সকল বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণ নিয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ দেন রেজাউল করিম।