২০২০ নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণা আসছে, তালিকায় নেই ট্রাম্প
২০২০ এর নোবেল শান্তি পুরস্কার কে পাবে সেই ঘোষণা আসবে সামনে শুক্রবার (৯ অক্টোবর)। তবে সম্ভাব্য ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের নাম নিয়ে বিশ্বজুড়ে এখন অনুমান ও আলোচনা তুঙ্গে। চলতি বছরে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের সম্ভাব্য তালিকায় নেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
জানা গেছে, মোট প্রার্থীসংখ্যা ৩১৮। যার মধ্যে ব্যক্তি ২১১ জন ও প্রতিষ্ঠান ১০৭ টি।
নোবেল শান্তি পুরস্কারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মনোনয়ন পাওয়া আর পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হওয়া এক জিনিস নয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টমাত্রই মনোনয়ন পাওয়া নিত্যনৈমত্তিক ঘটনা। তারা নিশ্চিত করে বলেছেন, এ বছর নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই ট্রাম্পের।
শুক্রবার (৯ অক্টোবর) এবছর শান্তিতে নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা করবে নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউট। তখনই জানা যাবে শেষ হাসি কার মুখে।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড্যান স্মিথ সিএনএনকে বলেন, এ বছর কে নোবেল পাবেন এ ব্যাপারে আমি দীর্ঘকাল পর সবচেয়ে কম নিশ্চিত।
এদিকে, ব্যতিক্রমধর্মী অস্থির এ বছরে শান্তিতে নোবেল পাওয়ার তালিকায় অনেকেই এগিয়ে রাখছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে (ডব্লিউএইচও)। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় ১০ মাস ধরে কাজ করছে সংস্থাটি।
এবারের শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সংগ্রাম মূল্যায়িত হবে বলে আশা করছেন উরডাল।
তিনি সিএনএনকে জানিয়েছেন, এ এমনই এক বছর, সাংবাদিকদের জন্য কাজের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির লড়াই দিন দিন আরও কঠিন হয়ে পড়ছে এবং এনজিওগুলোর কাজের পরিবেশ প্রতিকূল হয়ে যাচ্ছে। উভয় ব্যাপারেই তারা গভীর মনোযোগ দিচ্ছেন।
এজন্য, তালিকায় জার্নালিস্টস’কে (সিপিজে) ওপরে রেখেছেন উরডাল। তবে রিপোর্টারস উইথাউট বর্ডারস (আরডব্লিউবি) সম্ভাবনাকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি। অবশ্য, ব্যক্তিগতভাবে কোনো সাংবাদিকও পুরস্কারটি পেতে পারেন বলে অনুমান তার।
পাশাপাশি, পদ্ধতিগত বর্ণবাদ ও পুলিশি নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তোলা ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনকে সম্ভাব্য নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে দেখছেন কেউ কেউ।
বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস মতে, এ বছর নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার ক্ষেত্রে সুদানের বিদ্রোহ গুরুত্ব পাবে। ওই বিদ্রোহে প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে ক্ষমতাচ্যূত করা হয়। বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠন ‘ফোর্সেস ফর ফ্রিডম অ্যান্ড চ্যালেঞ্জ’ (এফএফসি) এবং তরুণ আন্দোলনকর্মী আলা সালাহকে নোবেল জয়ে সম্ভাব্য হিসেবে গণ্য করছেন উরডাল।
এদিকে, রাশিয়ার বিরোধী দলীয় নেতা এবং আগস্টে মারাত্মক বিষক্রিয়ার শিকার হওয়া আলেক্সি নাভালনিকেও সম্ভাব্য নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ভাবা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উরডাল বলেন, বিষ প্রয়োগের শিকার হওয়ার আগে থেকেই নাভালনি তালিকায় রয়েছেন। রাশিয়ার বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে তাকে পুরস্কারটির জন্য বিবেচনা করা হতে পারে।
অন্যদিকে, ড্যান স্মিথের বিশ্বাস এ বছর সম্ভবত কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থাকে পুরস্কৃত করা হবে। সে ক্ষেত্রে জাতিসংঘ’র সম্ভাবনাকেও তিনি উড়িয়ে দিতে নারাজ।
আবার নোবেলজয়ী হিসেবে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নের নাম আগেও আলোচনা হয়েছে। তার দেশ নভেল করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যথেষ্ট সাফল্য দেখানোয় সেই সম্ভাবনা এবারও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে বড় বড় আন্তর্জাতিক চুক্তি মধ্যস্থতায় তার সম্পৃক্ততার ঘাটতি এ ক্ষেত্রে এ ক্যাটাগরিতে নোবেলজয়ী বেশির ভাগ রাজনৈতিক নেতা থেকে তাকে পিছিয়ে রেখেছে।
নোবেল শান্তি পুরস্কারের সম্ভাব্য দাবিদার হিসেবে তালিকায় উঠে এসেছে পরিবেশ আন্দোলনের সুইডিশ কর্মী গ্রেটা থুনবারির নাম। গত বছরও তার নাম এই ক্যাটেগরিতে জোরেশোরে উচ্চারিত হয়েছিল। কিন্তু, এ বছর তার নোবেল জয়ের সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।