বগুড়া জেলা

বগুড়া পৌরসভার প্রায় ৯৭ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা

১৪৫ বছরের পুরাতন ও দেশের সর্ববৃহৎ বগুড়া পৌরসভার ৯৬ কোটি ৭৭ লাখ ২৩ হাজার ৬৭ টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশা। সোমবার বিকেল ৪টায় শহরের শহীদ টিটু মিলনায়তন ঘোষণা করেন। বগুড়া পৌরসভার আয়তন প্রায় ৬৯ দশমিক ৫৬ বর্গ কিলোমিটার।

বগুড়া পৌরসভা আয়োজিত বাজেট ঘোষণা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুর রশিদ। পৌর কাউন্সিলর তরুণ কুমার চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন পৌর প্যানেল মেয়র-১ পরিমল চন্দ্র দাস ও প্যানেল মেয়র-২ আলহাজ শেখ। এছাড়াও বাজেটের বিষয়ে বেশ কয়েকজন পৌরবাসী বাজেটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন।

বগুড়া পৌরসভার এবারের বাজেটে পৌর মেয়র নগর উন্নয়নে সহ বেশ কয়েকটি বেশি জোরদার করা হচ্ছে বলে জানান। পৌর বাজেটে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৩ মার্চ’২১ তারিখে বগুড়া পৌরসভার দায়িত্ব ভার গ্রহন করেছেন মেয়র কাউন্সিলররা।

বাজেটে আয়ের খাতে রাজস্ব খাতে মোট আয় ধরা হয়েছে ৫১ কোটি ৩৭ লাখ ২৩ হাজার ৬৭ টাকা। এরমধ্যে রয়েছে পৌরকর, স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর কর, ইজারা (হাট বাজার, বাস টার্মিনাল, পাবলিক টয়লেট, সিএনজি স্ট্যান্ড ইত্যাদি), বিভিন্ন ধরনের ফিস আদায় (দোকান ঘর ভাড়া, ট্রেড লাইসেন্স ও অন্যান্য ফিস), রাজস্ব খাতে সরকারি অনুদান, পানি শাখার আয় ও বিবিধ। এতে প্রারম্ভিক স্থিতি রয়েছে ৪ কোটি ৬২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা। এছাড়াও আয়ের খাতে সরকারি বরাদ্দে আয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ২০ লাখ টাকা, রাজস্ব উদ্বৃত্ত উন্নয়ন খাতে স্থানান্তরে আয় ধরা হয়েছে ২০ কোটি টাকা, গুরুত্বপূর্ণ নগর উন্নয়ন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড, বাংলাদেশ মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড, বৃহত্তর পাবনা-বগুড়া উন্নয়ন প্রকল্পে আয় ধরা হয়েছে ২৩ কোটি ২০ লাখ টাকা।

অপরদিকে বাজেটে ব্যায়ের খাতে রাজস্ব খাতেও সমপরিমাণ ব্যয় ৫১ কোটি ৩৭ লাখ ২৩ হাজার ৬৭ টাকা ধরা হয়েছে। এরমধ্যে মেয়র-কাউন্সিলরদের সম্মানী ভাতা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতার ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি ৪৯ লাখ ১০ হাজার টাকা। জ্বালানী তেল ও বিদ্যুৎ বিল ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা, শিক্ষাখাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২০ লাখ ৯০ হাজার টাকা, স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে (সিবিপ পরিচালনা, বিভিন্ন স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন, আবর্জনা অপসারণের মালামাল ক্রয়, মশক নিধন ও করোনা মোকাবেলা) ৯২ লাখ ৩২ হাজার টাকা, বিএমডিএফ প্রকল্পের ম্যাচিং মানি ও ঋণের কিস্তি পরিশোধে ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৫ হাজার ৬২৮টাকা, রাজস্ব উদ্বৃত্ত উন্নয়ন খাতে স্থানান্তর ব্যয় ২০ কোটি টাকা, গার্বেজ ট্রাক ক্রয় ও বিভিন্ন যানবাহন মেরামতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা, সরকারি পাওনাদি, স্টেশনারী মালামাল, আবর্জনা অপসারণের কাজে ট্রাক ভাড়ার ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৫২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, পানি শাখার ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৯৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা, বিবিধ ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ৯৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।

এছাড়াও রাস্তা, ড্রেন, পার্ক ইত্যাদি সহ সার্বিক উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২২ কোটি ২০ লাখ টাকা, গুরুত্বপূর্ণ নগর উন্নয়ন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড, বাংলাদেশ মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড, বৃহত্তর পাবনা-বগুড়া উন্নয়ন প্রকল্পে হতে প্রাপ্ত অর্থ উন্নয়ন কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৩ কোটি ২০ লাখ টাকা।

বাজেট ঘোষনায় পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশা জানান, শহরের উপযুক্ত স্থানে মুক্তিযুদ্ধে বগুড়ার অবদান স্মরণীয় করতেন স্বাধীনতা চত্বর নির্মাণ, রাস্তা ও ড্রেন সংস্কার ও উন্নয়ন, প্রয়োজনীয় ফুটপাত নির্মাণ, শিক্ষার্থীদের জন্য ছাউনি নির্মাণ, শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পাবলিক টয়লেট স্থাপন, পৌর এলাকার বিভিন্ন বিনোদন স্থান আধুনিকায়ন করা, পৌর এলাকার নীল সাগর দিঘিতে ওয়াকওয়ে নির্মাণ, গেট নির্মাণ ও বিভিন্ন রাইট স্থাপন, খেলার মান উন্নয়নে একটি ফুটবল স্টেডিয়াম নির্মাণ ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে, শহরের প্রবেশ পথে শুভেচ্ছা তোরণ নির্মাণ করা, বিভিন্ন হাট-বাজারের উন্নয়ন, নিজস্ব ও উন্নয়ন তহবিল দ্বারা পৌর এলাকায় উন্নয়ন করা, গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প স্থাপন, পৌরবাসীদের নিরাপদ পানি প্রদানের ব্যবস্থা, পৌর এলাকার মধ্যে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহন হতে আয়, যানজট নিরসনে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ, পৌর এলাকার রাস্তাগুলোতে নতুন সেট লাগানো ও আলোকিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ, ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ , পৌর স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা সেবার উন্নয়ন , ভেজাল বিরোধী অভিযান বৃক্ষরোপন কর্মসূচী পত্র সেবা অনলাইন সেবা নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন বিষয় পৌরসভার মেয়র তুলে ধরেন তার বক্তব্যে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বগুড়া জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক বলেন, পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের সমন্বয় যথাযথ উন্নয়নে অংশ নিতে হবে। পৌর মেয়র বার্সেলোনা কখনোই পৌর এলাকার উন্নয়ন চিত্র বা অবকাঠামোগত চিত্র নির্ধারন করতে পারে না। তাই সচেতন নাগরিকদের এগিয়ে আসতে হবে এবং পৌর এলাকায় সুন্দর ও সৃজনশীল হিসেবে গড়ে তুলতে ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা পালন করতে হবে।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button