বিশ্বব্যাপী কমেছে ধূমপায়ীদের সংখ্যা

বিশ্বব্যাপী ধূমপায়ীদের সংখ্যা বিগত কয়েক বছরে ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে। মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ধূমপানের প্রাণঘাতী পরিণতির কথা মাথায় রেখে এই আসক্তি বন্ধ করার জন্য বিশ্বের সব দেশগুলোকে আরও বেশি করে পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছে। খবর ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির।
২০২০ সালের হিসেব বলছে, বিশ্বব্যাপী প্রায় ১৩০ কোটি মানুষ তামাকজাত দ্রব্য সেবন করেছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাম্প্রতিক রিপোর্টে দেখা গিয়েছে ২০১৯ সালে এই সংখ্যাটা ছিল ১৩২ কোটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষা থেকে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ধূমপায়ীদের সংখ্যা ১২৭ কোটিতে নেমে আসবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই গবেষণায় এখনও পর্যন্ত যা ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তাতে দেখা যাচ্ছে সাত বছরের মধ্যে বিশ্বে প্রায় ৫ কোটি মানুষ ধুমপান ছেড়ে দিয়েছেন। গোটা বিশ্বে জনসংখ্যা যে হারে বাড়ছে, তার নিরীখে ধূমপায়ীদের সংখ্যা এতটা পরিমাণে হ্রাস পাওয়ায় যথেষ্ট আশাবাদী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে যে ২০০০ সালের হিসেবে গোটা বিশ্বে ১৫ বছরের বেশি বয়সিদের মধ্যে প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ তামাকজাত দ্রব্য সেবন করেছেন। তবে ২০২৫ সালের মধ্যে এই পরিসংখ্যান মাত্র এক পঞ্চমাংশে নেমে আসবে বলে আশা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রেইসাস এক বিবৃতিতে বলেছেন, “প্রতি বছর কম সংখ্যক মানুষকে তামাকজাত দ্রব্য সেবন করতে দেখাটা খুবই উৎসাহজনক। কিন্তু আমাদের এখনও অনেক দূর যেতে হবে এবং তামাকজাত দ্রব্য প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলি তাদের প্রাণঘাতী জিনিসপত্র বিক্রি করে যে বিশাল মুনাফা অর্জন করতে সবরকম কৌশল ব্যবহার করবে।”
তামাকজাত দ্রব্য সেবন করার ফলে প্রতি বছর আনুমানিক প্রায় ৮০ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। তাদের বেশিরভাগই সরাসরি তাদের নিজস্ব তামাক সেবনের কারণে হয়। বাকি ১২ লাখ মানুষ পরোক্ষভাবে তামাকের ধোঁয়ার কারণে মারা যান বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টে উঠে এসেছে।
ধূমপানের কারণে মৃত্যুর বার্ষিক পরিসংখ্যান কিছু সময়ের জন্য বাড়তে থাকবে বলে ওই রিপোর্টে সতর্ক করা হয়েছে। এমনকী তামাকের ব্যবহার হ্রাস পেলেও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে। কারণ, তামাক ব্যবহারকারীদের এবং সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের একটু একটু করে মৃত্যুর দিকে টেনে নিয়ে যায়।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৬০ টি দেশ ২০১০ সাল থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ তামাক সেবন কমানোর লক্ষ্যে রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যখন দুই বছর আগে বিশ্বব্যাপী তামাকের প্রবণতা নিয়ে সর্বশেষ রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল, তাতে মাত্র ৩২ টি দেশ ছিল এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণের পথে।