জাতীয়

“তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ কর্মশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে সরকার’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সঙ্গে খাপ নেয়ার লক্ষ্যে সক্ষমতা লাভের জন্য তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ কর্মশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে। আমরা চাই তরুণ প্রজন্মকে একটি দক্ষ কর্মশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা হোক।

রোববার প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে (পিএমও) জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এনএসডিএ) প্রথম বৈঠকে এসব কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, যুব সমাজকে প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সঙ্গে পরিবর্তনশীল বিশ্ব পরিস্থিতি মাথায় রেখে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে, যেন তারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম সমাজে তাদের অবস্থান যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে বজায় রাখতে পারে।

কোনো মতে সার্টিফিকেট অর্জনের জন্য পড়াশোনা না করে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে শুধু কোনো মতে ঘষে-মেজে বিএ, এমএ পাস করেই চাকরির পেছনে ছুটে বেড়ায়। তারা যেন স্বপ্রণোদিত হয়। আমাদের দলের পক্ষ থেকে গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠান সিআরআই উদ্যোগ নিয়েছে এবং তার মাধ্যমে ইয়াং বাংলা সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে উৎসাহিত করার পদক্ষেপ নিয়েছে।

সরকারপ্রধান বলেন, এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যে আভাসটা পাচ্ছি, আমরা পিছিয়ে থাকতে চাই না। বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকবে না, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই জনশক্তিকে গড়ে তুলতে চাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে অনুকূল জনমিতিক সুবিধা ভোগ করছে, যা ২০৩৩ সাল পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। প্রতি বছর ২২ লাখ কর্মক্ষম যুবগোষ্ঠী শ্রমবাজারে যুক্ত হচ্ছে। কিন্তু শ্রম বাজারে যুক্ত হওয়া যুবশক্তিকে দক্ষ করে গড়ে তোলা সম্ভব না হলে এ জনমিতিক সুবিধাকে জনমিতিক লভ্যাংশে রূপান্তর করা সম্ভব হবে না। তাই এ সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে ‘রূপকল্প ২০৪১’ এ পৌঁছানোর পথ সুগম করতে হবে।

বিভিন্ন দেশের শ্রম বাজারে দক্ষ জনশক্তির চাহিদার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, অনেক দেশ এখন বয়োবৃদ্ধের দেশে পরিণত হয়ে গেছে। সেখানে আমাদের বড় বিষয় হলো আমাদের বিপুল সংখ্যক যুব শ্রেণি আছে। কাজেই আমরা চাই শ্রম বাজারে যে সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে, সেই সঙ্গে তারা নিজেদেরকে উপযুক্তভাবে গড়ে তুলবে। আমি মনে করি বিশ্ব একটা গ্লোবাল ভিলেজ, কাজেই সব দিকেই উন্মুক্ত হচ্ছে। সেখানে আমাদের অনেক কর্মী বিদেশে কাজও করে। তাদেরকে আমরা চাই দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে।

শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষ জনবল তৈরি হয়েছে বা সম্ভাবনা রয়েছে; তা নিয়ে দেশে ও বিদেশে দক্ষতা মেলার আয়োজন করা যেতে পারে। দক্ষতা সনদায়নের ক্ষেত্রে একক সনদায়নের ব্যবস্থা প্রবর্তন ও কার্যকর করতে হবে, যা বিদেশে বাংলাদেশের দক্ষতার ব্র্যান্ডিং হিসেবে কাজ করবে। বিদেশের শ্রমবাজারে বাংলাদেশি কর্মীদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করবে।

পণ্য বহুমুখীকরণ, রফতানি বৃদ্ধি ও দেশে-বিদেশে বিনিয়োগ প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা যে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করি, সেখানে শুধু রেমিট্যান্সের ওপর নির্ভর করলে আমাদের হবে না। উৎপাদন বাড়াতে হবে ও বহুমুখীকরণ করতে হবে। রফতানির বাস্কেটটাও আমাদের বাড়াতে হবে। সেখানে আরো কি কি পণ্য রফতানি করতে পারি, তার জন্য নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে। সে পণ্য আমরা কিভাবে উৎপাদন করতে পারি অথবা আমরাও কিভাবে বিদেশে বিনিয়োগ করতে পারি সেই চিন্তাও থাকতে হবে। শুধু বিনিয়োগ আনবো তা নয়, বিনিয়োগ করতেও পারবো। সবকিছুর মাঝে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন দক্ষ জনশক্তি।

বৈঠকে  অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ও এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button