ম্যাচের ১৮ মিনিটে মুনতাসার তালবি যখন ১-১ সমতা ফেরালেন, নেইমার-রাফিনিয়াদের মনে নিশ্চয়ই তেমন একটা ক্ষোভই ফুঁসে উঠেছিল! তার প্রমাণ মিলল প্রথমার্ধে ব্রাজিলের পারফর্ম্যান্সে। পরের ২৭ মিনিটে যে গুণে গুণে আরও ৩ গোল জড়িয়েছে ব্রাজিল!
দ্বিতীয়ার্ধে রাগটা হয়তো একটু কমে গিয়েছিল। নাহয় প্রথমার্ধে ব্রাজিল যেমন খেলছিল, তাতে স্কোরলাইনটা নেহায়েত ৫-১ গোলে আটকে থাকার ছিল না।
তিউনিসিয়ার সাম্প্রতিক পারফর্ম্যান্সটা মন্দ নয় একেবারে। গেল জুনেই কিরিন কাপে দলটি হারিয়েছিল জাপান, চিলির মতো দলকে। গেল মার্চে বুরকিনা ফাসোর কাছে আফ্রিকান নেশন্স কাপের কোয়ার্টারে হারের পর থেকে নেই কোনো হার, এমনকি এরপর থেকে সাত ম্যাচে কোনো গোলও জড়ায়নি দলটির জালে।
সেই তিউনিসিয়ার বিপক্ষেই নেইমার নেমেছিলেন চার গোলের সাধ নিয়ে। চারটা গোল হলেই যে কিংবদন্তি পেলেকে ছাড়িয়ে ব্রাজিলের সর্বোচ্চ গোলদাতা বনে যেতেন তিনি!
তবে ম্যাচে অবশ্য নেইমার নন, প্রথম গোলটা করেন রাফিনিয়া। ১১ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে প্রতিপক্ষ বিপদসীমায় ক্যাসেমিরো বাড়ান দারুণ এক বল। সেটা আর কেউ হলে হয়তো আগে আয়ত্বে নিতেন, এরপর নিতেন শটটা। কিন্তু রাফিনিয়া তা করেননি, সেই লব করা বলটায় দারুণ এক হেডারে বলটা নিয়ে ফেলেন তিউনিসিয়ার জালে। প্রায় ছয় মাস পর প্রথমবারের মতো বল জড়ায় তিউনিসিয়ার জালে।
এরপরই মুনতাসারের গোলে সমতায় ফেরে তিউনিসিয়া। যদিও সেই সমতা টেকেনি এক মিনিটও। প্রথম গোলটা করেছিলেন যিনি, সেই রাফিনিয়ার বাড়ানো বলে এবার গোল করেন রিচার্লিসন।
তাদের জালে বল জড়ানোর রাগটা ব্রাজিল এরপর দমায় গোল উৎসব করে। সেই গোল উৎসবে ২৯ মিনিটে যোগ দেন নেইমার। পেনাল্টি থেকে দলকে এগিয়ে দেন ৩-১ গোলে।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে আলগা বলে বক্সের বাইরে দারুণ এক গোল করে বসেন রাফিনিয়া। ৪২ মিনিটে লাল কার্ড দেখে বসেন ডিলান ব্রোন।
একে তো দারুণ ফর্মে থাকা ব্রাজিল তার ওপর দল খেলোয়াড়ের সংখ্যা কমে গেছে এক জন, তাতে দ্বিতীয়ার্ধে গোলের বন্যায় ভেসে যাওয়ার শঙ্কাই চড়ে বসে তিউনিসিয়া শিবিরে।
তবে ব্রাজিল অতোটা নির্দয় হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে গোল এসেছে একটি। করেছেন ব্রাজিলীয় লিগের দল ফ্ল্যামেঙ্গোর স্ট্রাইকার পেদ্রো। তাতে ৫-১ গোলের জয় নিয়ে সেলেসাওরা শেষ করে বিশ্বকাপের আগে শেষ আন্তর্জাতিক ফুটবলের উইন্ডোটা।
এই উইন্ডো শেষে কোচ তিতে যে যারপরনাই উচ্ছ্বসিত, সেটা ম্যাচে তার অভিব্যক্তিই বলে দিচ্ছিল। শুরুর একাদশ থেকে বেঞ্চের খেলোয়াড়, সবাই যেমন ফর্মে ফিরে এসেছেন বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক আগে, তাতে কোন কোচই বা উচ্ছ্বসিত হবেন না?