বগুড়ায় পুলিশে চাকরির নামে প্রতারণা! গ্রেপ্তার এক

বগুড়ার পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ায় প্রতারক চক্রের ১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এ সময় তার কাছে ৩ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়।

একটি প্রতারক চক্র বগুড়াসহ অন্যান্য জেলায় পুলিশ ও বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এবং পুলিশ অফিসার মিথ্যা পরিচয় প্রদান করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে বগুড়া সদর থানায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে তা মামলা আকারে রূপান্তর হয়।

গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম মোঃ জাকির হোসেন(৫৫), পিতা-মৃত আঃ সালাম, মাতা-মোছাঃ জাহেরা বেগম, সাং-চক সেকেন্দার, থানা-গাবতলী, জেলা-বগুড়া এ/পি বাসা নং৯৮/ক, ওয়ার্ড নং-১৯, জলকর, থানা-কোতয়ালী জেলা-রংপুর।

এ সময় তার কাছে পুলিশের নিয়োগ পরীক্ষার লিখিত পরীক্ষার প্রবেশ পত্রের ফটোকপি। ও ৩ লক্ষ টাকা জব্দ করা হয়।

জেলা গোয়েন্দা শাখার পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, জাকির হোসেন তার সহযোগী মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, পিতা-অজ্ঞাত, সাং-কাপাসিয়া, থানা-গোবিন্দগঞ্জ, জেলা-গাইবান্ধা এবং মোঃ সানা (৪০) পিতা-অজ্ঞাত, সাং-রাণীরপাড়া, থানা-সোনাতলা, জেলা-বগুড়াসহ আরো অজ্ঞাতদের
যোগসাজসে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী দেওয়ার নাম করে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছিলো।

বাদীর ছেলে বগুড়া জেলার পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ, ডিসেম্বর-২০২২ এর প্রার্থী হিসাবে আবেদন করলে উক্ত বিষয়টি বাদীর দুঃসম্পর্কের আত্নীয় আসামী মোঃ আব্দুর রাজ্জাক জানতে পেরে তার বাড়িতে যান এবং বলেন যে, আমার পরিচিত লোক আছে তিনি আপনার ছেলেকে পুলিশের চাকুরী পাইয়ে দিবে বিনিময়ে তাদের সর্বমোট ১৪ (চৌদ্দ লক্ষ) টাকা দিতে হবে। বাদী জানান যে আমার ছেলে মেধাবী। তার এমনিতেই চাকুরী হয়ে যাবে। তাছাড়া বর্তমানে পুলিশের চাকুরী নিতে কোন টাকা লাগে না। উক্ত কথা শোনার পরে আসামীগণ বাদীকে বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন ও ভীতি প্রদর্শন করেন। উপায়ন্তর না দেখে বাদী আসামীগণকে বলে আমাকে দুই এক দিন সময় দেন আমি ভেবে আপনাকে জানাবো। পরবর্তীতে বাদীর ছেলে শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই, শারীরিক, লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষা শেষে প্রাথমিকভাবে উর্ত্তীন হয়। উক্ত খবর পেয়ে আসামী আব্দুর রাজ্জাক অপর দুই আসামীসহ ভুক্তভোগীর নিকট আসে এবং প্রতারিত করার উদ্দেশ্যে আসামী মোঃ জাকির হোসেন ভুক্তভোগীকে জানান তিনি পুলিশের বড় অফিসার তিনি চাইলেই বাদীর ছেলেকে পুলিশের চাকুরী পাইয়ে দিতে পারবে এবং চাইলে চাকুরী হতে বাদও দিতে পারবে। আসামীগণ বাদীকে জানান যে টাকা ছাড়া তার ছেলেকে মেডিকেল টেস্টে বাদ দেওয়া হবে এবং আজকের মধ্যে তাদের ১০ লক্ষ টাকা দিতে হবে বলে চাপ প্রদান এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। পরবর্তীতে আসামীদের প্রচন্ড চাপ ও ভয়ভীতির কারণে বাদী ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে গত ২১/০৩/২০২৩ খ্রি. বগুড়া সদর থানাধীন পাকুরতলা, চন্ডীহারা মহাসড়ক সংলগ্ন থ্রী স্টার নামক হোটেলের সামনে আনুমানিক বিকাল ৪টায় আসামীগণকে নগদ ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা এবং মোট ১৪,০০,০০০/-(লক্ষ) টাকার স্বাক্ষরসহ চেক এবং ভুক্তভোগীর ছেলের লিখিত পরিক্ষার প্রবেশ পত্রের ফটোকপি প্রদান করতে বাধ্য হন। বাকী টাকা পরিশোধ করলে আসামীগণ বাদীর নিকট হইতে নেওয়া ১৪ লক্ষ টাকার স্বাক্ষরিত চেক ফেরত দিবেন বলে জানান।

পরবর্তীতে বাদীর সন্দেহ হলে বাদী আসামীদের বিষয়ে খোজ নিয়ে জানতে পারেন তারা কেউ পুলিশ অফিসার নন । সকলেই প্রতারক চক্রের সদস্য । তখন বাদী বুঝতে পারেন যে, তিনি প্রতারণার স্বীকার হয়েছেন। এ সংক্রান্তে বাদী বগুড়া সদর থানায় আসামীদের বিরুদ্ধে একটি এজাহার দায়ের করেন ও বগুড়া সদর থানায় মামলা রুজু করা হয়। অতপর টিম ডিবি বগুড়া গোয়েন্দা তথ্যর ভিত্তিতে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামী জাকির কে সপ্তপদী মার্কেটের নিকট থেকে গ্রেফতার করে এবং উক্ত আসামীর নিকট থেকে আত্নসাৎকৃত ৩ লক্ষ টাকা ও নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার প্রবেশপত্র উদ্ধারপূর্বক জব্দ করে। আসামী জাকির প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া পুলিশ পরিচয় দিয়ে অন্যান্য পলাতক আসামীদের সহায়তায় অর্থ আত্নসাৎ এর বিষয়টি স্বীকার করে।

এ বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ইনষ্পেক্টর সাইহান ওলিউল্লাহ জানান, গ্রেপ্তারকৃতকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে। অনান্য আসামিদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

(এ আর)