আদমদিঘী উপজেলাপ্রধান খবর

সান্তাহারে অর্ধকোটি টাকার রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহারে অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে একটি রাস্তা নির্মাণের কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ এসেছে ঠিকাদার জাহিরুল ইসলাম নিম্নমানের ইট, খোয়া ও মাটিযুক্ত বালু কার্পেটিং কাজে ব্যবহার করছেন তিনি।

বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু করেন স্থানীয়রা। এ ব্যাপারে তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিটক হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। ঘটনাটি উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের রথবাড়ি এলাকার।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সান্তাহার পৌরসভার তত্বাবধানে ওয়ার্কশপ থেকে রথবাড়ি মসজিদ পর্যন্ত রাস্তার কার্পেটিং ও পুকুরের গাইড লাইন নির্মাণ কাজের টেন্ডার হয়। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজটি পান ঠিকাদার জাহিরুল ইসলাম। টেন্ডারে অনেক ঠিকাদার অংশগ্রহণ করেও পরিশেষে ২০ পার্সেন্ট ছাড় দেওয়ায় কাজটি পেয়েছেন তিনি। এরপর কাজ শুরু করেন। কাজের শুরুতে নিয়মমাফিক হলেও পরবর্তীতে নানা অনিয়ম শুরু হয়। নিম্নমানের ইট, খোয়া ও মাটিযুক্ত বালু নির্মাণ কাজে ব্যবহার করে কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধা আঙুল দেখিয়ে অবাধে কাজ করছেন।

পথচারী শেফালী বেগম জানান, এই রাস্তা দিয়ে দিনে কয়েকবার যাওয়া-আসা করতে হয়। এখানে প্রতিনিয়ত ছোট-বড় যানবাহন চলাচল করে। সেজন্য রাস্তাটি অত্যান্ত ব্যস্ততম। একারণে উন্নতভাবে রাস্তাটি করতে হবে কর্তৃপক্ষের। যেনো কয়েকবছর অনায়াসে ভালো থাকে। অথচ দেখলাম নিম্নমানের বিভিন্ন সামগ্রী ব্যবহার করছেন ঠিকাদার।

রথবাড়ি মহল্লার আমজাদ হোসেন জানান, নাম্বার বিহীন ইট, ময়লাযুক্ত খোয়া, বালির মধ্যে মাটি এসব ব্যবহার করে রাস্তাটি করা হচ্ছে। প্রতিবাদ করলেও ঠিকাদার লোকজনরা গুরুত্ব দেয় না।

একই এলাকার মুক্তা খন্দকার জানান, শ্রমিকরা বলছে এভাবে কাজটি করতে তাদের নির্দেশনা দিয়েছে ঠিকাদার। বলে যে আমরা তার কাজ করি পারিশ্রমিক নেই, মন মতো না হলে পারিশ্রমিক পাবো না। তাদের কথায় অবাক হলাম৷ 

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ঠিকাদার জানান, জাহিরুল ২০/২৫ পার্সেন্ট লেসে প্রত্যেকটি কাজ নেয়। এরপর সংশ্লিষ্ট অফিসে প্রচুর কমিশন দিয়ে তাদের হাত করে রাখেন। এরপরেও বিভিন্ন খরচ প্রদান করেন তিনি। সেজন্য দায়িত্বরত কর্তকর্তারা তার যে কোনো কাজ নামমাত্র দেখভাল করেন। বিল নিয়েও তেমন জটিলতা পোহাতে হয় না। যার ফলে তার কাজের মান গুণগত হয় না।

অভিযুক্ত ঠিকাদার জাহিরুল ইসলাম জানান, নিয়ম অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। কাজের মান সঠিক রয়েছে। এখানে কোনো অনিয়ম হবে না। 

তবে প্রাথমিকভাবে কাজে অনিয়মের সত্যতা পাওয়ার বিষয় জানিয়েছেন সান্তাহার পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী রায়হান আলী মন্ডল। তিনি বলেন, খবর পেয়ে কাজের সাইটে যাই। কাজের মান নিয়ে অভিযোগ ছিলো। সেটার সত্যতা পাওয়া গেছে। এবং নিম্নমানের খোয়া, ইট ও মাটি সরিয়ে ফেলতে ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। বাকিটা পৌরসভার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখবে।

সান্তাহার পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ জানান, রাস্তায় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়টি জানার পর কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। কাজে অনিয়ম করার কোনো সুযোগ নেই। সরজমিনে পরিদর্শন করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button