পবিত্র শবে মেরাজে বিশেষ আমল

শবে মেরাজ ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাত। এই রাতে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছেছিলেন এবং উম্মতের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা ও উপহার নিয়ে ফিরে এসেছিলেন, যার মধ্যে নামাজ অন্যতম। শবে মেরাজে আল্লাহর অসীম রহমত ও নৈকট্য লাভের জন্য মুসলমানরা বিশেষ ইবাদত ও দোয়া করেন। এ রাতকে মূল্যবান করতে এবং আত্মশুদ্ধির জন্য কিছু বিশেষ আমল রয়েছে, যা পালন করলে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে পারি।
শবে মেরাজের গুরুত্ব
শবে মেরাজ ২৭ রজব রাতে সংঘটিত হয়। এই রাতেই নবী করিম (সা.) আল্লাহর নির্দেশে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা এবং সেখান থেকে সপ্তাকাশ ভ্রমণ করেন। এই সফরে তিনি জান্নাত ও জাহান্নামের দৃশ্য দেখেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হিসেবে গ্রহণ করেন। তাই এই রাত মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র ও শিক্ষণীয়।
শবে মেরাজে বিশেষ আমল
শবে মেরাজে ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছাকাছি যাওয়া এবং পাপমুক্তির চেষ্টা করা উচিত। কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো:
- নফল নামাজ আদায় করা
শবে মেরাজে নফল নামাজ আদায় করা উত্তম। দুই রাকাত করে একাধিকবার নামাজ পড়া যায়। প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহার পরে পছন্দমতো সূরা পড়তে পারেন। - তওবা ও ইস্তিগফার করা
এই রাতে অতীত জীবনের পাপের জন্য ক্ষমা চাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “আস্তাগফিরুল্লাহ” পড়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে নিজের ভুলত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত। - কুরআন তিলাওয়াত করা
পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত শবে মেরাজে একটি বড় আমল। বিশেষ করে সুরা ইয়াসিন, সুরা আল-ইসরা এবং সুরা মুলক তিলাওয়াত করা আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায়। - দোয়া করা
শবে মেরাজে আল্লাহর কাছে নিজের প্রয়োজন ও দুনিয়া-আখিরাতের কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা উচিত। এই রাতে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। - সালাতুত তাসবিহ পড়া
সালাতুত তাসবিহ নামাজ পড়া একটি বিশেষ আমল। এটি চার রাকাতের বিশেষ নামাজ, যা পাপমুক্তির জন্য উপকারী। - সাদকাহ বা দান করা
গরিব-অসহায় মানুষদের জন্য দান-সাদকা করা শবে মেরাজে একটি মহৎ কাজ। এটি শুধু দুনিয়া নয়, আখিরাতেও উপকারে আসে। - আল্লাহর গুণবাচক নাম স্মরণ করা
শবে মেরাজে আল্লাহর ৯৯টি গুণবাচক নাম বারবার উচ্চারণ করা উচিত। এটি আত্মিক প্রশান্তি আনে এবং আল্লাহর রহমত লাভের পথ খুলে দেয়।
শেষ কথা
শবে মেরাজ মহানবী (সা.)-এর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা, যা আমাদের জন্য অনেক শিক্ষণীয়। এ রাতকে সঠিকভাবে পালন করতে হলে আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন হওয়া, তওবা করা, দোয়া করা এবং নিজের জীবনের ভুলগুলো সংশোধনের চেষ্টা করা প্রয়োজন। আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে এই রাতের ফজিলত অর্জন করার তাওফিক দেন।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে শবে মেরাজের বরকত লাভ করার সুযোগ দিন। আমিন।