ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: সামরিক শক্তিতে এগিয়ে কোন দেশ?

দক্ষিণ এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চিরচেনা বৈরিতা আবারও সামনে এসেছে সাম্প্রতিক কাশ্মীরভিত্তিক হামলার ঘটনায়। এরই প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে—সামরিক শক্তিতে কার অবস্থান বেশি শক্তিশালী?
মানবসম্পদ ও সেনাবাহিনী
ভারতের সক্রিয় সেনাসদস্যের সংখ্যা প্রায় ১৪.৫ লাখ, যেখানে পাকিস্তানে এই সংখ্যা ৬.৫ লাখের মতো। রিজার্ভ ফোর্সেও ভারত এগিয়ে। এই দিক থেকে ভারত তুলনামূলকভাবে সংখ্যাগত ও কৌশলগতভাবে শক্তিশালী।
স্থল বাহিনী
ভারতের আছে প্রায় ৪,৬০০ ট্যাঙ্ক, যেখানে পাকিস্তানের আছে প্রায় ৩,৭০০। ভারতের রয়েছে আধুনিক T-90 ভীষ্ম ও অর্জুন ট্যাঙ্ক এবং Pinaka রকেট লঞ্চার ও BrahMos সুপারসনিক মিসাইল—যা পাকিস্তানের তুলনায় অনেকটাই উন্নত।
বিমান বাহিনী
ভারতের বিমান সংখ্যা প্রায় ২,৩০০, যেখানে পাকিস্তানের প্রায় ১,৪০০। যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবস্থায় ভারত এগিয়ে। Su-30MKI, Rafale, ও Tejas ভারতীয় বিমানবাহিনীকে বড় এক সুবিধা দেয়।
নৌবাহিনী
ভারতের নৌবাহিনীতে রয়েছে ২টি বিমানবাহী রণতরী, ১৩টি ডেস্ট্রয়ার, ও ১৮টি সাবমেরিন। পাকিস্তানের নৌসক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কম, যার মধ্যে কোনো বিমানবাহী রণতরী নেই এবং মাত্র ৮টি সাবমেরিন রয়েছে।
পারমাণবিক অস্ত্র ও কৌশল
দু’দেশই পারমাণবিক অস্ত্রধারী। পাকিস্তান যেখানে “First Use” নীতি অনুসরণ করে, ভারত “No First Use” নীতিতে বিশ্বাসী। সাম্প্রতিক তথ্যে জানা গেছে, পাকিস্তানের আনুমানিক ১৬৫টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে, আর ভারতের আছে প্রায় ১৫০টি।
বাজেট ও প্রযুক্তি
ভারতের বার্ষিক প্রতিরক্ষা বাজেট ৭৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যেখানে পাকিস্তানের বাজেট প্রায় ১০ বিলিয়নের মতো। প্রযুক্তিগত দিক থেকেও ভারত যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক চুক্তির ফলে অনেক উন্নত।
উপসংহার
সামরিক শক্তির পরিসংখ্যানে ভারত পাকিস্তানের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে। তবে উভয় দেশই পারমাণবিক শক্তিধর হওয়ায় প্রত্যক্ষ সংঘাতের ঝুঁকি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত বিপজ্জনক। এই কারণে শান্তি ও কূটনৈতিক সমাধানই সবচেয়ে যৌক্তিক পথ।