বগুড়া জেলাবিএনপিরাজনীতি
ট্রেন্ডিং

জুনের মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে ডিসেম্বরে নির্বাচনে সমস্যা কোথায়?

বগুড়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান

ডিসেম্বরের মধ্যেই দেশে জাতীয় নির্বাচন দাবি করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সংস্কার কমিশন ও সংস্কার কমিশনের ঐক্যমত কমিশনের প্রধান বলছে, জুন মাসের মধ্যে সংস্কার ও নির্বাচনের প্রস্তুতি দুটিই যদি সম্পন্ন হয়; তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচনে সমস্যা কোথায়?


যারা বলেন ডিসেম্বরের পরে হবে নির্বাচন। তারা যুক্তি দিয়ে বলেন কেন ডিসেম্বরের পরে সময় দরকার আপনাদের?

শনিবার (২৪ মে) বগুড়া শহরের সেন্ট্রাল স্কুল মাঠে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগীয় তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা বলেছি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চাই। নির্বাচন কমিশন বলেছে, জুন মাসের মধ্যে তারা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে। সংস্কার কমিশনের ঐক্যমত কমিশন যেটা হয়েছে তার প্রধান বলেছেন আগামী এক মাসের মধ্যে তারা রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যে আলোচনা করেছেন তার আলোকে একটি সনদ প্রস্তুত করতে পারবেন। জুন মাসের মধ্যে সংস্কার ও নির্বাচনের প্রস্তুতি দুটিই যদি সম্পন্ন হয়; তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচনে সমস্যা কোথায়? যারা বলেন ডিসেম্বরের পরে হবে নির্বাচন তারা যক্তি দিয়ে বলেন কেন ডিসেম্বরের পরে সময় দরকার আপনাদের।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, তরুণদের প্রতিনিধিত্ব করে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দল। এই দল নতুন কর্মসূচি দিয়ে দলকে সংগঠিত করছেন তারেক রহমান।

গণতন্ত্রের জন্য লড়াই দীর্ঘদিনের উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘ইতিহাসের প্রথমবারের মতো গণতন্ত্রের সেই লড়াই দেশের সব শ্রেণির মানুষ একখানে হয়েছে। এর ফলে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার পলায়ন করেছে। দেশে সম্ভবনার দ্বারপ্রান্তে। এই সম্ভবনাকে নসাৎ করার ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি। বাংলাদেশের মানুষ এক দফার জন্য আন্দোলন করেছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে এবং নির্দলীয় নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য। এক দফার একটা অংশ আদায় হয়েছে। আরেকটা অংশ এখনো আদায় হয় নাই। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনাই প্রধান কাজ, জনগণকে তার অধিকার ফিরিয়ে দেওয়াই প্রথম কাজ, নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠাই প্রথম কাজ, জনগণের কাছে জবাবদিতী করতে বাধ্য এমন একটা সরকার প্রতিষ্ঠাই প্রথম কাজ। ’

অন্তবর্তী সরকার অনির্বাচিত সরকার উল্লেখ নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘অন্তবর্তীকালীন সরকার, আপনাদের মনে রাখতে হবে আপনারা স্থায়ী সরকার নয়। আপনারা নির্বাচিত নন। আপনারা অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার। এর অর্থ হলো নির্বাচিত একটি সরকারের আগে ও পরের মাঝখানের সরকার। সুর্নিদিষ্ট দায়িত্ব পালন করে সরে যেতে হবে। জনগণ স্থায়ী সরকার চায়। ’

বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, সেই ধ্বংসস্তুপে পরিণত প্রতিষ্ঠানকে পুর্নগঠন করতে আমাদের নেতা তারেক রহমান ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা ঘোষণা করেছেন। …তারা অনেক কথা বলছেন। কিন্তু ৩১ দফার বাহিরে নতুন কিছু তাদের মাথা থেকে আসছে?

সংস্কারের বিভিন্ন দিক উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, দেশে সংস্কার প্রয়োজন। সব সংস্কার করে ফেলার জন্য এই সরকার প্রতিষ্ঠা হয়নি। আমরা বলেছি একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রতিষ্ঠার জন্য যেসব সংস্কার জরুরি সেসব সংস্কার আলোচনার মাধ্যমে সম্পন্ন করে যত দ্রুত সম্ভব জনগণের অধিকার জনগণকে ফিরিয়ে দিন।

‘এখনো কোনো কোনো দল এখনো সংগঠিত হয়নি। তাদের সংগঠিত হওয়ার জন্য সময় দরকার। অন্তবর্তী সরকারের সাথে কেউ ঐক্য করছে। তাদের ঐক্য করার জন্য সময় দরকার। তাদের ঐক্যের জন্য আমরা অপেক্ষা করব? না এটা উচিত হবে! জনগণ এই কারণেই সময় দেওয়ার জন্য প্রস্তুত না। ’

এর আগে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আরও বক্তব্য রাখেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবকদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এসএম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাকিবুল, ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাসিরউদ্দিন নাসির, বগুড়া জেলা যুবদলের নিহত নেতা ইমরানের মেয়ে তাসনিয়া ইসলাম মীম।

বাবার মৃত্যুর বিচার চেয়ে তাসনিয়া ইসলাম মীম বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসন আমলে আমার বাবাকে হত্যা করা হয়। তাকে হত্যা করে বগুড়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী আব্দুল মতিন। সেই হত্যাকাণ্ড বগুড়াসহ দেশে আলোড়ন তৈরি করে। সেই হত্যার বিচার এখনো আমরা পাইনি। আমরা এই হত্যার বিচার চাই। আমার বাবা হত্যার পর থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের পরিবারের খোঁজ খবর নেওয়াসহ দেখভাল করেছেন। তিনি দীর্ঘ জীবন লাভ করুন। আল্লাহর কাছে দোয়া রইলো।

সমাবেশের আগে বৈরি আবহাওয়ার কারণে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এর মধ্যেই রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে উপস্থিত হন উত্তরের ১৬ জেলার বিএনপির নেতাকর্মীরা৷ তারুণদের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের প্রতিটি জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটির যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কলেজ কমিটির নেতাকর্মীরা অংশ নিচ্ছেন সমাবেশে৷

আয়োজকরা জানান, এই সমাবেশ শুধু একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, এটি তারুণ্যের আকঙ্ক্ষা ও প্রত্যয়ের এক ঐতিহাসিক মিলনমেলা।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button