
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে গত মার্চে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহের ইতিহাসে রেকর্ড হয়েছিল। সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে আসন্ন ঈদুল আজহাকে ঘিরেও। সদ্যসমাপ্ত মে মাসে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে পাঠিয়েছেন ২৯৭ কোটি মার্কিন ডলার, যা একক মাস হিসেবে দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রবাহ।
বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে) মে মাসের এই রেমিট্যান্সের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৩৬ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা।
রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মে মাসে আসা ২৯৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪১ কোটি ৫০ লাখ ডলার বেশি। গড় হিসেবে প্রতিদিন দেশে এসেছে ৯ কোটি ৫৮ লাখ ডলার, অর্থাৎ প্রায় ১,১৬৯ কোটি টাকা।
ব্যাংকভিত্তিক রেমিট্যান্স পরিসংখ্যান:
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলার
কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২০ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বেশি
বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৩৭ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার
বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪১ লাখ ৩০ হাজার ডলার
মে মাসে এমন ৯টি ব্যাংক রয়েছে, যেগুলো কোনো রেমিট্যান্স পায়নি
অর্থবছরভিত্তিক পরিসংখ্যান:
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত ১১ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৭৫১ কোটি ডলার, যা দেশের ইতিহাসে একটি অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহের সর্বোচ্চ রেকর্ড। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ২ হাজার ১৩৭ কোটি ডলার। এই হিসাবে প্রবৃদ্ধি ২৮.৭ শতাংশ বা ৬১৩ কোটি ডলার।
প্রতিমাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ (২০২৪-২৫):
জুলাই: ১৯১.৩৭ কোটি ডলার
আগস্ট: ২২২.১৩ কোটি ডলার
সেপ্টেম্বর: ২৪০.৪১ কোটি ডলার
অক্টোবর: ২৩৯.৫০ কোটি ডলার
নভেম্বর: ২২০ কোটি ডলার
ডিসেম্বর: ২৬৪ কোটি ডলার
জানুয়ারি: ২১৯ কোটি ডলার
ফেব্রুয়ারি: ২৫৩ কোটি ডলার
মার্চ: ৩২৮.৯৯ কোটি ডলার (ইতিহাসে সর্বোচ্চ একক মাস)
এপ্রিল: ২৭৫.২০ কোটি ডলার
মে: ২৯৭ কোটি ডলার (দ্বিতীয় সর্বোচ্চ একক মাস)
বিশ্লেষণ:
রেমিট্যান্স প্রবাহের এই ঊর্ধ্বগতি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনরুদ্ধারে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। ঈদকে কেন্দ্র করে প্রবাসীদের অর্থ প্রেরণের এই প্রবণতা ব্যাংকিং খাতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।