
মাসুম হোসেন: বগুড়া শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে দিন দিন বাড়ছে যানজট। এর অন্যতম কারণ শহরের বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে নিয়মিত অবৈধ পার্কিং। এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশের সাথেই নেই নির্ধারিত গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। যেগুলোর আছে, সেগুলোও কার্যকরভাবে ব্যবস্থাপনা না হওয়ায় বিপাকে পড়ছেন রোগী, স্বজন, পথচারী ও যানবাহনের চালকরা।
জানা গেছে, শেরপুর সড়কের লতিফপুর কলোনি এলাকা থেকে শুরু করে সূত্রাপুরের মফিজপাগলার মোড় পর্যন্ত মাত্র দুই কিলোমিটারে গড়ে উঠেছে অন্তত ২০টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। প্রতিদিন হাজারো মানুষ চিকিৎসা নিতে আসেন এসব প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু সামনে পর্যাপ্ত পার্কিং না থাকায় রাস্তায়ই রাখা হয় ছোট-বড় যানবাহন। এতে করে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট।
শহরের ঠনঠনিয়া এলাকার পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ডক্টরস ক্লিনিকের সামনে নিয়মিত যানজট দেখা যায়। গত রোববার (২৯ জুন) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, পপুলার ডায়াগনস্টিকের সামনে চিকিৎসকের দুটি ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার পার্কিং করে রাখা হয়েছে। গার্ডরা গাড়িগুলোর দেখভাল করলেও যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে প্রতিনিয়ত।
এক অটোচালক লিটন হোসেন বলেন, “প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ঠনঠনিয়া এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকতেই হয় যানজটে। চিকিৎসা নিতে আসা মানুষের দুর্ভোগ দেখলে কষ্ট লাগে।”
ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ শহরের অন্যসব সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সামনেও একই অবস্থা বলে জানান কানছগাড়ি এলাকার বাসিন্দারা। মিজানুর রহমান, আলাল হোসেনসহ স্থানীয় অন্তত ২০ জন বাসিন্দা জানান, “গাড়ি রেখে রোগী দেখতে গেলেই চিন্তা থাকে গাড়ি চুরির। আর ফুটপাত তো সব সময় দখলেই থাকে।”
তাদের অভিযোগ, ক্লিনিকগুলোর অবকাঠামো অনুমোদনের সময় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পার্কিংয়ের বিষয়টি বিবেচনায় নেননি। এখন সে ভুলের খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
সমাধানের বিষয়ে স্থানীয়রা বলেন, প্রতিটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে বাধ্যতামূলকভাবে পার্কিং ব্যবস্থা থাকতে হবে। যাদের নেই, তাদের স্থানান্তরের উদ্যোগ নিতে হবে।
এ বিষয়ে বগুড়ার জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা বলেন, সড়কে গাড়ি রাখা সম্পূর্ণ অবৈধ। আমি ইতোমধ্যে ট্রাফিক পুলিশকে অবৈধ পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। এরপরেও যদি সমাধান না হয়, প্রয়োজনে প্রশাসন নিজেই মাঠে নামবে।
সচেতন মহলের মতে, জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণের ভোগান্তির কারণ না হয়ে বরং শহরের যান চলাচলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সহযোগী ভূমিকা রাখবে এমনটাই প্রত্যাশা।