জাতীয়

৪০ হাজার কোটি টাকার বিদেশি সম্পদের সন্ধান

বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচার করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গড়া প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে পাঁচটি দেশের সাতটি শহরে অনুসন্ধান চালিয়ে এই তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সিআইসির মহাপরিচালক আহসান হাবিব।

রোববার (১৭ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন তুলে ধরেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান ও সিআইসির মহাপরিচালক। প্রেস উইং থেকে পাঠানো বার্তায় বিষয়টি জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, নয়টি দেশে ৩৫২টি পাসপোর্টের সন্ধান পাওয়া গেছে, যা অর্থের বিনিময়ে কিছু বাংলাদেশি সংগ্রহ করেছে। দেশগুলো হলো—অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডা, অস্ট্রিয়া, ডমিনিকা, গ্রেনেডা, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, নর্থ মেসিডোনিয়া, মাল্টা, সেন্ট লুসিয়া এবং তুরস্ক।

আহসান হাবিব জানান, দেশে বসেই তথ্য সংগ্রহের পর গোয়েন্দারা বিদেশে সরেজমিনে তদন্ত চালিয়ে ৩৪৬টি সম্পত্তির সন্ধান পেয়েছেন। তিনি বলেন, এটি অনুসন্ধানের আংশিক চিত্র মাত্র, আরও অনেক তথ্য এখনও উন্মোচন বাকি রয়েছে। বাজেয়াপ্ত সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনা এবং জড়িতদের সাজা নিশ্চিত করতে সিআইসি কাজ করছে। এ প্রক্রিয়ায় ছয়টিরও বেশি আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, অর্থপাচারে জড়িত ব্যক্তিরা পূর্ববর্তী সরকার আমলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডাটাবেজ নিয়ন্ত্রণে নিজেদের লোক বসিয়ে বহু তথ্য মুছে ফেলেছিল। তবে মুছে দেওয়া তথ্য উদ্ধারে সিআইসি সক্ষমতা অর্জন করেছে।

বিস্তারিত জানার পর প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দেন, দুদক, সিআইসি, সিআইডিসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সমন্বয়ে অর্থপাচারকারীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে কেউ যাতে দেশের সম্পদ লুট করে বিদেশে সম্পত্তি গড়তে না পারে, সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।”

এছাড়া তিনি সিআইসিকে আরও গভীরে অনুসন্ধান চালিয়ে সম্ভাব্য দেশগুলোতেও তদন্ত বিস্তৃত করার নির্দেশ দেন। অর্থপাচারকে তিনি ভয়াবহ দেশদ্রোহিতা আখ্যা দিয়ে বলেন, “ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুন্দর দেশ গড়তে হলে লুটেরাদের আইনের আওতায় আনতেই হবে। জনগণের সামনে প্রকাশ করতে হবে কীভাবে তারা দেশের সম্পদ লুট করেছে।”

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button