সান্তাহারে শখের বসে নির্মিত শখের পল্লী
বগুড়ার সান্তাহারে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে ‘শখের পল্লী’ নামে একটি বিনোদন কেন্দ্র। সান্তাহার পৌরসভা এলাকায় বশিপুর গ্রামে প্রায় ৪৫ বিঘা জমিতে পার্কটি নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন জেলা থেকে বিনোদনের জন্য আসছেন বিনোদনপ্রেমীরা।
মনোরম পরিবেশে আনন্দ-বিনোদনের লক্ষ্যে ২০১৬ সালের ২০ই ফেব্রুয়ারী থেকে পার্কের কার্যক্রম শুরু হয়। পার্কটিতে রয়েছে- মিনি চিরিয়াখানা সেখানে দেখা মিলে বানোর,খরগোশ, অষ্ট্রেলিয়ান ঘুঘু,কাকাতুয়া,লাভবার্ড,বাজুরিকাসহ বিভিন্ন ধরনের পাখি। এছাড়া আরো রয়েছে সুইমিং পুল, কমিউনিটি সেন্টার, পিকনিক কর্নার ও ক্যাবল কার। বাচ্চাদের খেলার জন্য দোলনা,সুপার চেয়ার, পিচ্ছিল, মইসহ বিভিন্ন রাইডস। আছে কয়েকটি পুকুর, সেখানে ১টি পুকুরে স্পিড বোডে চড়ে ঘুরে বোড়ানো যায় আরেকটি পুকুরে রয়েছে প্যাডেল বোর্ড এবং তারপাশের পুকুরে রয়েছে জলপরির ভাস্কর্য ও পুকুরের চার পাশদিয়ে রয়েছে মিনি ট্রেনলাইন যা বাচ্চাদের কাছে অতি জনপ্রিয় সেখানে স্টেশনটির নাম দেয়া আছে ষাটবাড়ী স্টেশন। ভাস্কর্যের মধ্যে বিশালাকারের ঈগল,জলপরি,মৎসকন্যা,পেঙ্গুঈন,হাতি, হরিণ, বাঘ, ক্যাঙ্গারু, ঘোড়া, জিরাফ, বকসহ ইত্যাদি। দেয়ালে লিখনের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৃশ্যের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া রয়েছে ধ্রুবতারা ও শুকতারা নামের কটেজ যা গেষ্টহাউজ হিসেবে ব্যাবহার হয়ে থাকে। এই গেষ্ট হাউজে দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকরা এসে থাকতে পারবেন। পার্শ্বেয় রয়েছে ওয়াক্তিয়া মসজিদ নামাজের সময় হলে পার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারি ও দর্শনার্থীরাও এখানে নামাজ আদায় করে থাকেন। খাবারের জন্য রয়েছে রেস্টুরেন্ট সহ কনফেকশনারী দোকান।
শখের পল্লীর প্রধান আকর্ষণ ‘সুইমিং পুল’। এখানে ছোটদের সাঁতার শেখানোর জন্য অভিভাবকরা নিয়ে আসেন। এছাড়া দূর-দূরান্ত থেকে এসে সব বয়সীরা জলকেলিতে মেতে ওঠেন। যে যার মতো করে সাঁতার কাটা ও লাফালাফি করে সেলফি তোলেন। বিশেষ করে শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সুইমিং পুলে প্রচুর লোকজনের সমাগম ঘটে। এছাড়া ঈদ, পূজা ও বিশেষ দিনগুলোতে প্রচুর লোকের আগমন ঘটে। সান্তাহার সহ আশেপাশের বগুড়া, নাটোর, জয়পুরহাট ও রাজশাহী জেলা থেকেও বিনোদনের জন্য আসে মানুষ। প্রতিদিন গড়ে ৫০০ জন এবং শুক্রবার প্রায় ২ হাজার জনের মতো বিনোদন প্রেমী আসে।
পার্কটিতে প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা, বিভিন্ন রাইডস ১০ টাকা ও সুইমিং পুল ৫০ টাকা। পার্কের কারণে এলাকার বেকার যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থান সৃৃষ্টি হয়েছে। কারণ পার্কের পাশেই কয়েকটি কনফেকশনারী দোকান গড়ে উঠেছে। বগুড়ার একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন জাফর ইকবাল শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় সপরিবার পার্কে বেড়াতে এসেছেন। তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘মেয়ের ইচ্ছা পার্কে এসে সুইমিং পুলে সাঁতার শেখার। শহরে গোসলের জন্য ভালো পরিবেশের কোন পুকুর নেই। বাচ্চাকে সাঁতার শেখানোর চেষ্টা করছি। খুবই ভালো লাগছে এ পরিবেশ।’