পদক্ষেপ এবং বগুড়া অনলাইন রক্তদান সংগঠনের বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উদযাপন
এম.এইচ, বগুড়া লাইভ: বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস মঙ্গলবার, ৮মে ২০১৮।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করছে গতকাল। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘বিয়ের আগে পরীক্ষা করলে রক্ত, সন্তান থাকবে থ্যালাসেমিয়া মুক্ত’।
আর উক্ত প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে গতকাল ৮মে বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষে সারাদেশের ন্যায় বগুড়াতেও নানা ধরনের আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষে বগুড়া অনলাইন রক্তদান সংগঠন- পদক্ষেপ রক্তদান সংগঠন (পরস), কাজীপুর অনলাইন রক্তদান সংগঠন এবং সুখানপুকুর অনলাইন রক্তদান সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে বগুড়া সাতমাথায় র্যালি, আলোচনা সভা এবং মানব-বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল ১১.৩০ মিনিটে শহীদ খোকন পার্ক থেকে র্যালিটি শুরু হয়ে কবি কাজী নজরুল ইসলাম সড়ক প্রদক্ষিণ করে সাতমাথায় এসে শেষ হয়।
উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সুলতান মাহমুদ খান রনি।
বিশেষ অতিথি বগুড়া প্রেস ক্লাবের সহ.সভাপতি আব্দুস সালাম বাবু এবং অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক মুকুল ইসলাম।
স্থিরচিত্র: শাহাদত হোসেন।
থ্যালাসেমিয়া (Thalassemia) সম্পর্কিত প্রাথমিক ধারনা:
মারাত্মক হলেও সহজে প্রতিরোধ-যোগ্য রোগ এটি। থ্যালাসেমিয়া রক্তের একটি রোগ যা সাধারণত বংশগতভাবে ছড়ায়। অন্যভাবে বলতে গেলে থ্যালাসেমিয়া একটি জিনগত রক্তরোগ যা উত্তরাধিকার সূত্রে পিতা-মাতার কাছ থেকে শিশুরা পেয়ে থাকে। এই রোগে আক্রান্ত রোগীর রক্তে অক্সিজেন পরিবহনকারী হিমোগ্লোবিনের উপস্থিতি কম থাকে। থ্যালাসেমিয়া মৃদু এবং তীব্র দুরকমের হতে পারে। এক-দুই বছরের শিশুর ক্ষেত্রে, ভালভাবে চিকিৎসা না করলে এটি শিশুর মৃত্যুর কারণও হতে পারে। প্রতিবছর পৃথিবীতে প্রায় ১ লক্ষ শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত মানুষ সাধারণত রক্তে অক্সিজেন-স্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া রোগে ভুগে থাকেন। মৃদু থ্যালাসেমিয়ার ক্ষেত্রে, অনেক সময় চিকিৎসার তেমন প্রয়োজন হয় না। অপরদিকে তীব্র থ্যালাসেমিয়ার ক্ষেত্রে রোগীকে নিয়মিত রক্ত দিতে হয়।
এই রোগ এবং রোগ নিয়ে শিশুদের জন্ম নেয়া প্রতিরোধে বিশেষজ্ঞরা বিয়ের আগে পুরুষ ও নারীর রক্ত পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন। ক্রনিক রোগ থ্যালাসেমিয়ার সম্ভাব্য উদ্ভবের উপসর্গগুলো খুঁজে বের করার জন্য পুরুষ ও নারী উভয়েরই বিয়ের আগে একটি বিস্তারিত রক্ত পরীক্ষা করা উচিত। আর এবারের প্রতিপাদ্যটি এই কথাগুলোই বহন করে উক্ত বাক্যে।
থ্যালাসেমিয়া প্রধানত দুই প্রকার। আলফা টাইপ ও বেটা টাইপ।
এর মাধ্যমে বুঝা যায় কোন ধরনের হিমোগ্লোবিন জিন আক্রান্ত আর কোন ধরনের হিমোগ্লোবিন জিন নষ্ট। তবে কিছু ব্যতিক্রম ধরনেরও আছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যার মধ্যে ৭ শতাংশ আলফা টাইপ থ্যালাসেমিয়া রোগী আর ৪ শতাংশ বেটা টাইপ থ্যালাসেমিয়া রোগী রয়েছে।