বগুড়ায় বাতিল কাগজ থেকে তৈরি হচ্ছে বোর্ড
বগুড়ায় বিস্তৃত হচ্ছে কাগজের বোর্ডশিল্প
বগুড়ায় ফেলনা আর টোকানো কাগজ পুনরায় ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে কাগজের নতুন বোর্ড, বিভিন্ন ধরনের মোড়ক, চলছে বই বাইন্ডিং, প্যাকিং, মিষ্টির প্যাকেট, বই খাতার কাভার জুতার প্যাকেটসহ বিভিন্ন পণ্যের মোড়ক। ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে এই শিল্পের সম্ভাবনা।
বগুড়া শহরের নিশিন্দারা কারবালা, মাটিডালি, কাহালু উপজেলা সড়কেরআড়োলা, বগুড়া সদরের জয়বাংলা মোড়ে, শহরের জয়পুরপাড়া, এরুলিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে পুরাতন বা টোকানো কাগজ দিয়ে নতুন করে কাগজ তৈরির ১৮টি মেশিন বসানো হয়েছে। এই মেশিনে তৈরি হচ্ছে টনটন বোর্ড কাগজ।
বগুড়া জেলা থেকে দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ হয়ে থাকে ১৮টি। আর সাপ্তাহিক ৪টি। বগুড়ায় রয়েছে উত্তরের ১৬ জেলার সবচেয়ে বড় প্রেসের ব্যবসা। প্রায় ৫ শতাধিক প্রেসে প্রতিদিনের টনটন কাগজের কাজ হয়ে থাকে। বোর্ড তৈরির শ্রমিক হারুন উর রশীদ জানান, কাগজগুলো কম দামে কেনা হয়। কেনার পর সেটি বিশেষ হাউজে পানি দিয়ে ভিজে রাখা হয়। হাউজে পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখাটা এক ধরনের কৌশল থাকে। শুরুর দিকে হাউজে পানি দিয়ে কাগজগুলো পা দিয়ে খুঁচিয়ে নরম করা হতো বা মন্ড তৈরি করা হতো। এখন এ কাজটি মেশিন দিয়ে করা হয়। এরপর সেই মন্ড পানি মেশিনের মাধ্যমে একটি ট্যাংকিতে নেওয়ার পর বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে কাগজ এর মেশিনে নেওয়া হয়। পরে সেটি তুলে রোদে শুকিয়ে নিতে হয়। তারপর অর্ডার মত কাটিং, সরবরাহ করা হয়।
শহরের প্রেস ‘প্রিন্ট মিডিয়া’র মালিক আমিনুল ইসলাম জানান, বই বাধাঁই করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের বোর্ড কেনা হয়ে থাকে। ঢাকার একটি ২৪ আউন্সের বোর্ড এর দাম পড়ে ৩০ থেকে ৩২ টাকা আর বগুড়ার লোকাল বোর্ডের দাম পড়ে ২২ থেকে ২৩ টাকা করে।
কাগজ ছাপানোর পর চাহিদা মাফিক কাটিং করা হয়। কাটিং করার টুকরো কাগজগুলো আগে ফেলে দিতাম ময়লা হিসেবে। কিন্তু এখন সেটির ব্যাপক চাহিদা। সাদা কাগজ প্রতি কেজি বিক্রি হয় ২৮ টাকা আর নিউজ পেপার বা রঙিন ছাপানো কাগজ বিক্রি হয় ৮ টাকা কেজি। প্রতি মাসে গড়ে ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ কেচি ফেলনা কাগজ বিক্রি করে থাকি। এই কাগজ দিয়ে মেশিনের মাধ্যমে আবারো বোর্ড কাগজ তৈরি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এক অর্থে ফেলনা কাগজ দিয়ে নতুন করে এখানেই আবার বোর্ডের কাজ করা হচ্ছে। বগুড়া শহরের তালুকদার শপিং মার্কেট, প্রেসপট্টি, বাউন্ডিং পট্টি, শাপলা মার্কেটে এই কাগজ বিক্রি হচ্ছে।