বগুড়া সদরের নামাজগরের জাকারিয়া ৩০০ ডলার নিয়ে আমেরিকায় এসে এখন মিলিয়নিয়ার
১৯৯৯ সাল। ডিভি লটারি পেয়ে মাত্র ৩০০ ডলার নিয়ে আমেরিকায় আসেন জাকারিয়া। আজ তিনি অন্য উচ্চতায় পৌঁছেছেন। নিজের পরিশ্রমে আজ তিনি মিলিয়ন ডলারের মালিক।
জাকারিয়া বলেন, ‘দুটি শিশুসন্তান দৃষ্টি-দ্বীপসহ পরিবার নিয়ে কানসাসের উচিটা শহরে আসি। এদিন বেলাল মামার চিকেনের দোকানে কাজ নিয়ে হাসিনসন শহরে পাড়ি জমাই। যেতে যেতে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল। পরদিন সকালে সবকিছু অচেনা মনে হলো। সফেদ মানুষগুলো কেমন জানি আড়চোখে দেখতে শুরু করল। বাঙালি বলতে কেউ নেই। কদিন পর পুরো শহরে মনজু ভাইসহ তিনজন বাঙালির দেখা মিলল। কোনোভাবেই মন বসে না। দুই মাসের মাথায় চলে গেলাম সোজা ডালাসের আলিংটনে।‘আলিংটনে দেখা মিলল বাংলাদেশি জুয়েল ভাইয়ের সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে ঠিকাদারির কাজে নেমে পড়ি। দেড় বছর পর আবারও উচিটা শহরে ফিরে আসি। সে থেকে জীবনের নানা বাঁকে ওঠানামার মধ্য দিয়ে এ পর্যন্ত আসা।’
আমেরিকার মধ্যবর্তী অঞ্চল (মিডওয়েস্ট) কানসাস রাজ্যের উচিটা শহরে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে দাঁড় করিয়েছেন জাকারিয়া। হতাশা বা পেছনে ফিরে তাকানো তিনি পছন্দ করেন না। তাঁর সামনে চলার ধরন আলাদা। শোনা ও জানার সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী-আত্মপ্রত্যয়ী জাকারিয়া। উচিটা শহরে বেশ বড়সড় ‘দেশীমাট’ নামের দোকান খুলেছেন তিনি।
জাকারিয়া বলেন, এশিয়ার বিভিন্ন অনুন্নত দেশে চোখে পড়ে বিভিন্ন দুর্যোগ, খাদ্যসংকট। তাঁর ঠিক বিপরীত চিত্র উন্নত বিশ্বে দেখতে পাওয়া যায়। এখানে একশ্রেণির মানুষ টাকা ও খাবারের পাহাড়সম অপচয় করেন।
নানা পদের খাবার সাজানো স্টলে ভরপুর উচিটা শহরে রয়েছে এশিয়াবাজার, এশিয়ান গ্রোসারি। নতুন মুদিদোকান হিসেবে এমন কিছু নেই, যা দেশীমাটে শোভা পাচ্ছে না। জাকারিয়া জানান, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে বাংলাদেশ থেকে ডাইভার্সিটি প্রোগ্রামের লটারি পেয়ে আমেরিকায় এসেছিলেন। সে স্বপ্ন আজ পূর্ণতা পেল। সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ। জাকারিয়ার বাড়ি বগুড়া জেলার নামাজগর, বাদুড়তলায়।