দশ বছর প্রেম অতঃপর মিথ্যে বিয়ে করে প্রেমিক উধাও
বগুড়া লাইভঃ বগুড়া সোনাতলা উপজেলার তাপসী আক্তার (২২) ও হাফেজ নাঈমুর রহমান নাইমের (২৫) তাদের মাঝে দশ বছরের জানাশোনা। একে অপরকে ভালোবেসে মন দেয়া-নেয়াও হয়ে গেছে অনেক আগেই। ছেলের টাকার প্রয়োজন হলেই প্রেমিকার কাছে বলত প্রেমিক। হাতের কাছে যা থাকতো সবই তুলে দিতো ভালোবাসার মানুষের কাছে। এভাবেই গত দশ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছে তাদের।
নাঈম কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও সোনাতলা উপজেলার চালালকান্দি মসজিদের ইমাম।
সবই ঠিকঠাক ছিল। পড়াশোনা শেষ হলে পারিবারিকভাবে বিয়ে করে সংসারের স্বপ্ন দেখছে তাপসী। সেই স্বপ্নে ধ্বংস করে দিল প্রেমিক নাঈম।
মাঝে মধ্যেই প্রেমিকাকে একান্তই কাছে পেতে প্রস্তাব দিতে থাকে নাঈম। তার প্রস্তাবে ধরা দিত না প্রেমিকা। শেষ পর্যন্ত ফুন্দি আঁটে ভুয়া বিয়ের। প্রেমিকাকে রাজি করায় সেই বিয়েতে। গোপনে সেরে ফেলে বিয়ের কাজ। ভুয়া কাজি, ভুয়া কাবিন, বাসর হয়। ভোর হতে না হতেই উধাও হয়ে যায় নাঈমুর। তারপর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
জানা যায় উক্ত বিয়েতে ১০ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করা হয়। নগদ ৫০০ টাকা তুলে দেয়া হয় নতুন বউয়ের হাতে। কোন এক আত্মীয়ের বাসায় রাতে বাসর হয়। ওই দিন ভোরেই বউকে রেখে নাঈম চলে যায় কুষ্টিয়ায়। তারপর থেকে আর যোগযোগ করে না।
তাপসী বলেন, মোবাইলে নাঈমের সঙ্গে অনেক দিন যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি কিন্তু সে মোবাইল রিসিভ করেই খারাপ ব্যবহার করে। অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ দেয়। সে আমাদের বিয়ের কথা অস্বীকার করে বলে তোমার সাথে যে বিয়ে হয়েছে সেটা ভুয়া। কাবিননামাও ভুয়া। বিষয়টি নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে বিপদ হবে বলে হুমকি দেয় নাঈম।
কোন পথ খুঁজে না পেয়ে তাপসী বিষয়গুলো পরিবারের লোকজনকে জানায়। তারা নাঈমের পরিবারকে বিষয়টি অবহিত করলেও নাঈমের পরিবার সেই বিষয়ে কোন গুরুত্ব দেয়নি। উল্টো তাপসীর পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে।
গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমেও বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেছে তাপসীর পরিবার। তাতেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। নাঈম একটি প্রভাবশালী মহলের আশ্রয় নিলে সোনাতলা থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি।
পরে ১৮ই এপ্রিল তাপসী বাদী হয়ে বগুড়া জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ একটি মামলা করে। মামলায় নাঈমকে প্রধান আসামি করা হয়। এবং প্রতারক নাঈমের বিচার চায়।
মামলার বিষয়টি নিয়ে বিষদভাবে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।