কাহালু উপজেলা

বগুড়া কাহালুর ঐতিহাসিক স্থান পাঁচপীর মাজার

সাইফুল্লাহ মানসুর (বগুড়া লাইভ) : পাঁচ জন পীর বা অলি একই স্থানে শায়িত আছেন বলে স্থানটির নামকরণ হয়েছে ‘‘পাঁচপীর’’ মাজার। মাজারটি উঁচু একটি ঢিবির উপর অবস্থিত। তবে পীরগণের নাম ও তাদের আগমন সম্পর্কে কোন নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি।

কথিত আছে ঐ এলাকার এক ব্যক্তি মাজার এলাকা সমতল করার দিনগত রাতে স্বপ্নে উক্ত স্থানে ০৫ (পাঁচ) জন পীরের মাজার দেখতে পান বলে এলাকাবাসী নিকট থেকে জানা যায়। পরে ১৯৫২ সালে মাজার এলাকা সমতল করার সময় ইট দ্বারা ০৫ (পাঁচ) টি কবর বাধানো হয়।

পাঁচ পীর মাজার সম্পর্কে বিভিন্ন মতবাদ রয়েছে নিচে কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা বলা হলো

ইতিহাস থেকে জানা যায় ১৩৩৪ খৃষ্টাব্দে আব্দুল আজিজ (রহঃ) নামের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির নেতৃত্বে ইসলাম প্রচারে জন্য ০৭ (সাত) সদস্যের একটি দল প্রথমে এদেশে আগমন করেন। পরবর্তীতে নুর উদ্দীন ইয়ামিন (রহঃ) এর নেতৃত্বে ০৫ (পাঁচ) সদস্যের একটি দল এ উপজেলায় প্রেরণ করা হয়। তারা উপজেলার প্রতাপপুর গ্রামে এসে আশ্রয় গ্রহন করেন এবং এখান থেকে সর্বপ্রথম ইসলাম প্রচার কার্যক্রম শুরু করেন।

এলাকাবাসী থেকে জানা যায়, ১৩০০ খৃষ্টাব্দে সুদূর বাগদাদ (ইরাক) থেকে ০৫ (পাঁচ) জন পীরের প্রধান পীরজাদা মোঃ আহমদল্লাহ (রহঃ) প্রথমে মাজারের ১ কিঃমিঃ পশ্চিমে ফকিরপাড়া গ্রামের পাশে দরগাতলা নামক স্থানে একটি পাকুড় গাছের মাথায় লাল ঝান্ডা (পতাকা) দিয়ে তার নীচে আস্তানা গড়েন। কিছুদিন পর তার অপর ০৪ (চার) সঙ্গী ঝান্ডা দেখে সেখানে সমবেত হয়ে সম্মিলিত ভাবে ইসলাম প্রচার শুরু করেন। তৎকালীন ঐ এলাকার প্রতাপশালী এক জমিদার ইসলাম প্রচারে বাধা দিলে পীরগণ এলাকার মুসলমানদের সহযোগিতায় জমিদারকে বিতাড়িত করে মাজার এলাকায় তার কাচারী বাড়ী দখল করে সেখান থেকে ইসলাম প্রচার শুরু করেন।

পরবর্তীকালে পীরগণ ইন্তেকাল করলে এলাকার ভক্তগণ পর্যায়ক্রমে তাদের পাঁচপীর মাজার নামক স্থানে কবরস্থ করা হয় বলে এ নামকরণ হয়েছে ‘‘পাঁচপীর মাজার’’।

এলাকাবাসীর কাছ থেকে আরো জানা যায় ১৯৬৮ সালে পীরজাদা মাওঃ মোহাম্মাদী ফরিদি তার একজন মুরিদকে নিয়ে এ মাজার শরীফে মোরাকাবা ও মুশাহেদী করে পীরগণেরনাম জানতে পারেন। এরা হলেন পীরজাদা মোঃ আহমদল্লাহ (প্রধান), পীরজাদা মোঃ আব্দুল গফুর, পীরজাদা মোঃ আব্দুস সামাদ ও পীরজাদা মোঃ আব্দুর রহমান।

বর্তমানে এখানে একটি মসজিদ, একটি মাদ্রাসা ও রেল ষ্টেশন রয়েছে।
প্রতিবছর মাঘ মাসের শেষে এখানে ০৩ (তিন) দিনব্যাপী ওরশ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button