নন্দীগ্রামে ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা অনুষ্ঠিত
সুমন কুমার নিতাই, নন্দীগ্রাম (বগুড়া): সনাতন ধর্মালম্বীদের মতে চৈত্র মাসের শেষ সপ্তাহে ভক্তরা মহাদেবের সন্তুষ্টি লাভের আশায় সপ্তাহব্যাপী নানান পূজার আয়োজন করেন। ফলপূজা, কাদাপূজা, নীল পূজাসহ সপ্তাহব্যাপী বিভিন্ন পূজা পালন শেষে আয়োজন করা হয় গা শিউরে উঠা চড়ক পূজা। ভয়ংকর এই পূজা গত শনিবার অনুষ্ঠিত হলো নন্দীগ্রাম উপজেলার ওমরপুর হাঁটুয়া সার্বজনীন (ভক্ততলা) শ্রী শ্রী কালীমাতা মন্দির আশ্রমে।
চড়ক পূজায় পূজারীর পিঠে লোহার রড দিয়ে তৈরী বিশেষ বড়শি ফুঁড়িয়ে চড়ক গাছের সঙ্গে বাশঁ দিয়ে তৈরি করা এক ধরনের চড়কায় ঝুলন্ত দড়ির সঙ্গে পিঠের বড়শি বেঁধে দেওয়া হয়। তখন বড়শি বিদ্ধ পূজারী শূণ্যে ঝুলতে থাকেন। আগের দিন রাতে নীল পূজার পর ওই পূজারী উপোস থাকেন। পরদিন বিকেলে এ চড়ক পূজা শেষেই উপোস ভাঙেন। চড়ক গাছের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অন্য পূজারীরা শিবপাঁচালী পাঠ করতে থাকেন।
আবার ইশ্বরের আর্শীবাদ লাভের আশায় অন্যরা শিশু সন্তানদের চড়কায় ঘুরতে থাকাপূজারীর কাছে শুন্যে তুলে দেন। এ অবস্থায় দর্শনার্থীদের উদ্দেশ্যে বাতাসা ছিটান এবং ঢাক বাজান এই ঝুলন্ত পূঁজারী। এছাড়াও দু’একজন পূজারী মুখের একপাশ দিয়ে লোহার রড ঢুকিয়ে অপর পাশদিয়ে বের করে আরাধনা করে থাকেন।
এই পূজা দেখতে সেখানে হাজির হন হাজার হাজার দর্শনার্থী। ভয়ংকর এ পূজা দেখে তাদের চোখে-মুখে আতঙ্কিত হওয়ার ছাপ ভেসে ওঠে। তবে সনাতন ধর্মালম্বীদের বিশ্বাস, যারা শিব ঠাকুরের সন্তুষ্টি লাভের জন্য স্বেচ্ছায় কঠিন আরাধনার পথ বেঁছে নিয়েছেন বিনিময়ে পরলোকে শিবঠাকুর তাদের স্বর্গে যাওয়ার বর দেবেন।
নন্দীগ্রামে উপজেলার হাটুয়া গ্রামে ৫০ বছর আগে নিজ আশ্রমে এই পূজা শুরু করেন সাধন চন্দ্র দাস। ইতিমধ্যে এ চরকপূজার অনুষ্ঠানটিতে স্থানীয়রা ছাড়াও দূর-দুরান্তের বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থীর আগমন ঘটে।