”বগুড়ার ইতিহাস’ এর লেখক – কাহালুর প্রভাস চন্দ্র সেন
প্রভাস চন্দ্র সেনঃ ( আনুমানিক ১৮৮২-১৯৬৯) ইতিহাসবিদ ও আইনজীবীঃ
প্রভাস চন্দ্র সেন আনুমানিক ১৮৮২ সালে তৎকালীন বগুড়া জেলার কাহালু উপজেলায় মহেশপুর গ্রামে জন্মগ্রহন করেন । তাহার পিতা শ্রীনাথ সেন এবং মাতা গয়ামনি দেবী । তাহার পিতা শ্রীনাথ সেন ন্যায়নিষ্ঠ ও জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন।
তিনি আত্মপরিচয় প্রসঙ্গে লিখেছেন ” মহেশপুর গ্রামটি পূর্বে সমৃদ্ধশালী ছিল, এই গ্রামের অতিগোএীয় সেনবংশীয় বারেন্দ্র কায়েস্থগন বিশেষ প্রসিদ্ধ । এই বংশে গ্রন্থাগারের জন্ম। ইহারা পূর্বে পলাগাছা গ্রামে বাস করিতেন , পণ্ডিতা ডাকাইতের অত্যাচারে স্থানভ্রষ্ঠ হইয়াছেন( বগুড়ার ইতিহাস) ।
প্রভাস চন্দ্র সেন সম্ভবত কলকাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে উচ্চতর বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯০৭ সালে বারে আইনজীবী হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ১৯৪০ সালে বগুড়া বার সমিতির সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৪৮ সালে বগুড়া বার সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন এবং ১৯৫১ সাল পর্যন্ত ঐ দায়িত্ব পালন করেন ।
সেন সাহেব কংগ্রেস রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তৎকালীন কংগ্রেস দলের মুখপত্র সাপ্তাহিক ” দেশের কথা” পত্রিকার অন্যতম লেখক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। যা বগুড়া থেকে প্রকাশিত হতো।
প্রভাস চন্দ্র সেনের গ্রন্থ থেকে জানা যায় তিনি পুটিয়া ও লোণসিংহে ইংরেজি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রভাস চন্দ্র সেন বি.এল ”বগুড়ার ইতিহাস” নামক যে গ্রন্থটি লিখেছেন তাহার গুরুত্ব অপরিসীম । প্রমাণ্য গ্রন্থ হিসেবে প্রভাস চন্দ্র সেন কর্তৃক ”বগুড়ার ইতিহাস” গ্রন্থখানি পরবর্তী কালের বগুড়া সংক্রান্ত যে কোন গবেষণার জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ । তিনি আরও কিছু প্রবন্ধ ও গ্রন্থ রচনা করেন, তারমধ্যে বরেন্দ্র রিসার্চ সোসাইটি থেকে প্রকাশিত হয় কিছু রচনা (Mahasthan and its Environs ছাড়া অন্য বইগুলো দুষ্প্রাপ্য) ।
প্রভাস চন্দ্র সেন ”বরেন্দ্রী কাহিনী্”, ”কৃষ্ণ চরিত”, ”কায়স্ততত্ত্ব” নামে গ্রন্থ রচনা করেন। ”বরেন্দ্রী কাহিনী্” দুইখণ্ডে সমাপ্ত এই গ্রন্থটি বহু সাপ্তাহিক ও মাসিক সংবাদ পত্ত্রে প্রকাশিত এবং বিশেষভাবে প্রসংসিত হয়।
প্রভাস চন্দ্র সেন বি.এল ১৯৫২ সালে ভারতে গমন করেন এবং বসবাস শুরু করেন। তিনি ১৯৬৯ সালে কলকাতায় পরলোক গমন করেন।