বগুড়া সদর উপজেলা

বগুড়া হতে পারে পাখির অভয়ারণ্য

সূর্যোদয় বা র্সযাস্ত, সবটুকু সময় জুড়েই বৈচিত্রময় পাখির কিচিরমিচির। গোধুলী পেরিয়ে যায়, হারিয়ে যায় সূর্যের আলো, তখনও যেন গোধুলীর পূর্ব মুহূর্তের অপরুপ সৌন্দর্যের অলংকার হয়ে থাকে পাখিরা। প্রতিদিন অন্ধকার ভোড়ে বেরিয়ে খাদ্য সংগ্রহ করে নিরাপদ আশ্রয় ফিরে। যাওয়া-আর ফিরে আসার মনোমুগ্ধকর এই দৃশ্য আলাদা এক অনুভূতি।

সরকারী পূর্নাঙ্গ পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বগুড়া হয়ে উঠতে পারে পাখির অভয়ারণ্য। অনুকুল আবহাওয়াসহ পছন্দসই পরিবেশ থাকায় সৃষ্টিকাল থেকেই এ অঞ্চলে পাখির আনাগোনা ছিল প্রচুর। প্রকৃতির ধারাবাহিকতায় পরিবেশ দূষন এবং বৈরী পরিবেশসহ পাখি শিকারীদের নিয়মিত আক্রমনের কারণে মাঝে বেশ কিছুটা সময় বাগান, জঙ্গল বা উপযুক্ত জলাভূমিতে পাখির আনাগোনা কমে গিয়েছিল।

বর্তমান সময়ে পরিবেশবাদী ও স্থানীয় প্রশাসন কিছুটা নড়েচড়ে ওঠায় আবারও পাখির আনাগোনা বেড়েছে এখানে। স্থানীয় পরিবেশবাদীরা বগুড়ার শাজাহানপুর, ধুনট, সারিয়াকান্দী, শিবগঞ্জ ও শেরপুর উপজেলার বেশ কিছু স্থানে মহা সংকটাপন্ন ও দূর্লভ প্রজাতির প্রায় ১১০ প্রজাতির পাখির সন্ধান পেয়েছে, এরমধ্য-

শাজাহানপুর উপজেলার ডেমাজানী, বৃটিশ শাসক বলিহার রাজার পুরাতন কাচারীবাড়ি, আড়িয়া বাজার, মানিকদিপা ফায়ারিং রেঞ্জ, জাহাঙ্গীরাবাদ ক্যান্টনমেন্টসহ অধিকাংশ স্থানে,

ধুনট উপজেলার মাধবডাঙ্গা, আওলাকান্দী, ভান্ডারবাড়ীসহ যমুনাচরের কয়েকটি স্পটে, সারিয়াকান্দী উপজেলার চরাঞ্চল ডাকাতমারা ও এর আশপাশ এলাকায়,

শিবগঞ্জ উপজেলার ঐতিহাসিক মহাস্থান এবং শেরপুর উপজেলার হাতিগাড়া, শালফা ও খানপুর এলাকাতেও এসব পাখির দেখা মেলে।

মহা সংঙ্কটাপন্ন চন্দনা টিয়া, বামুনী কাঠ শালিক, খয়রাপাখ, পাপিয়ার, বনসুন্দরী/শুমচা, দাগি ছাতারে, সাইবেরীয়ান চুনীকন্ঠী, লক্ষী পেঁচা, কমলা বউ/দামা, দুধরাজ, নিশি বক, ছোট বগা, মাঝারী বগা, বড় বগা, কানি বকসহ বিভিন্ন জাতের বক, শামুখ খোল, দূর্লভ নীল শিসদামার, সাদাগলা মানিকজোড়, কালাগলা মানিকজোড়, গাং শালিক, বিভিন্ন জাতের চিল, কাক, শালিক, কাঠ ঠোকরা, বসন্ত বৌরী, চড়ুই, জলজ পাখি পানকৌরি, বিভিন্ন জাতের ভরত, কোকিল এবং ঘুঘুসহ ৯৩ প্রজাতির দূর্লভ আবাসিক (স্থায়ী বসবাস) ও পরিযায়ী (অতিথি) পাখির নিরাপদ আশ্রয়স্থল এসব অঞ্চল।

সরকারি আজিজুল হক কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অরুণ কুমার সরকার বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং বর্ধিত জনসংখ্যার নানামুখী কর্মকান্ডে প্রকৃতি তার স্বাভাবিক পরিবেশ অনেটাই হারিয়ে ফেলেছে। যা স্বাভাবিক পরিবেশ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে বললেও খুব একটা ভূল হবেনা। তাই পরিবেশ বাঁচাতে ও জীব-বৈচিত্র রক্ষায় আমাদের অত্যাধিক সচেতন হতে হবে। দাবি একটাই, সরকারী ভাবে সংরক্ষণ পূর্বক পাখিদের অভয়াশ্রম ঘোষণা।

 

টি. এম. মামুন, বগুড়া:

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button