জাতীয়

বগুড়ায় আউশ ধান আবাদ করে ভালো ফলন পেলেও দাম নিয়ে খুশি হতে পারছেন না কৃষকরা

বাজারে যা দাম, তাতে কোনো রকমে শুধু খরচ উঠছে

বগুড়ায় এবার আউশ ধান আবাদ করে ভালো ফলন পেলেও দাম নিয়ে খুশি হতে পারছেন না কৃষকরা। বাজারে যা দাম, তাতে কোনো রকমে শুধু খরচ উঠছে! ফলে দারুণ ফলনে তারা যে মুনাফার স্বপ্ন দেখছিলেন, কম দামের কারণে তা বাস্তবে মিলছে না।

বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার ১২টি উপজেলার মধ্যে বন্যাপ্রবণ সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, ধুনট, নন্দীগ্রাম, শেরপুর ও সদরে আউশের আবাদ হয় সবচেয়ে বেশি। জেলায় এবার মোট আউশ ধান আবাদ হয়েছে ২৬ হাজার ১৮৫ হেক্টর জমিতে, ২২ হাজার ৫০০ হেক্টর আবাদ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে যা প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর বেশি। এখন আউশ ধান কাটা প্রায় শেষের দিকে। চাষীরা এরই মধ্যে ধান বিক্রি শুরু করেছেন। এবার বিঘাপ্রতি আউশের ফলন হয়েছে ১২-১৩ মণ।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার জেলার কিছু স্থান বাদে অধিকাংশ স্থানেই আউশের ভালো ফলন হয়েছে। তবে সংকট দেখা দিয়েছে দাম নিয়ে। শেরপুর উপজেলার ঘোলাগাড়ী, সাধুবাড়ী, কহিতকুল ও পালাশন গ্রামের বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, গত বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম বেশ কম। এক বিঘা জমিতে ধান আবাদ থেকে মাড়াই পর্যন্ত সব মিলিয়ে তাদের খরচ হয়েছে ৬-৮ হাজার টাকা। বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৭০০ টাকায়। এতে দেখা যাচ্ছে, এক বিঘা থেকে প্রাপ্ত ধান বিক্রি করে সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকা পাওয়া যাচ্ছে। ফলে তাদের তেমন কোনো লাভ থাকছে না।

বগুড়া সদরের মহাস্থান, সুলতানগঞ্জ ও সারিয়াকান্দির কয়েকটি হাটে সরেজমিন দেখা যায়, এসব স্থানে প্রতি মণ আউশ ধান বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়। এ সময় কথা হলে সারিয়াকান্দির ধান ব্যবসায়ী শাহাদৎ হোসেন বলেন, বেশি শুকনো ধান ৭০০ টাকা মণ দরে কিনছেন। মূলত ধানের মান অনুযায়ী এ কেনাবেচা চলছে।

বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক প্রতুল চন্দ্র সরকার জানান, আবহাওয়ার কারণে স্থানীয় চাষীরা ১৫-২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমন চাষ করেন। সাধারণত এর আগেই আউশের ফলন ঘরে তোলা হয়। যারা দেরিতে আউশ চাষ করেছিলেন, তারা ফলন তুলেই আমন চাষ করবেন। জেলায় মোট আউশের আবাদ থেকে প্রায় ৭৬ হাজার টন চাল পাওয়া যাবে। কৃষকদের দাম কম পাওয়া নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দামের বিষয়টি মূলত বাজার ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button