জাতীয়নির্মাণ সামগ্রী

খুব দ্রুতই বগুড়া বিমানবন্দর থেকে ঢাকা রুটে বিমান ও প্রাইভেট প্লেন উড়বে

সম্প্রসারণ করতে হবে রানওয়ে

২২ বছরেও বগুড়া বিমানবন্দরে বাণিজ্যিকভাবে বিমানসেবা চালু হয়নি। বাণিজ্যিক বিমানের পরিবর্তে বর্তমানে সেখানে চলছে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ স্কুলের কার্যক্রম। শিল্পোদ্যোক্তাসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ দ্রুত বগুড়ায় বাণিজ্যিক বিমান চালুর জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন।

জেলা প্রশাসন ভূমি অধিগ্রহণ শাখা সূত্র জানায়, বগুড়া বিমান বন্দরের বর্তমান ৫ হাজার ফুট রানওয়ের সঙ্গে আরও ৩ হাজার ফুট রানওয়ে নির্মাণ করা হবে। এর সঙ্গে জ্বালানি রিজার্ভার, যাত্রীগণের সুবিধা, মালামাল ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য সুবিধার জন্য অন্তত একশ’ একর ভূমি প্রয়োজন। বিদ্যমান রানওয়ের পশ্চিমে জমি কেনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সূত্র জানায় ভূমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব দেয়া আছে। মন্ত্রণালয় থেকে এখনও চিঠি আসেনি। চিঠি পাওয়ার পরই অধিগ্রহণের ব্যবস্থা নিয়ে কাজ শুরু হবে।

 

বগুড়া বিমান বন্দর থেকে ঢাকা রুটে বাংলাদেশ বিমান ও প্রাইভেট উড়োজাহাজ উড়বে। তবে কবে তা চালু হবে তা ঠিক হয়নি। সূত্র জানায়, বিমান বন্দরের বিদ্যমান যে রানওয়ে তা আরও কিছুটা সম্প্রসারিত করতে হবে। আধুনিকায়ন করতে হবে অবকাঠামোগুলোকে। বর্ধিত রানওয়ে নির্মাণের জন্য ভূমি হুকুম দখলের নির্দেশ এখনও আসেনি। চিঠি চালাচালি চলছে। আশা করা হয়েছে এ বছরইে বগুড়া বিমান বন্দর সিভিল এ্যাভিয়েশনের (বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ) কাছে যাবে। বর্তমানে বগুড়া বিমানবন্দর বিমান বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে চালু রয়েছে।

বগুড়ার প্রবীণ ব্যক্তিগণ বলেন, আকাশপথে বগুড়ার যোগাযোগ যে লাভজনক তা ষাটের দশকেই প্রমাণিত। ওই সময়ে বগুড়ার বনানীতে হ্যালিপ্যাডে হেলিকপ্টার সার্ভিস ছিল। পঞ্চাশ বছরে বগুড়া আরও উন্নত হওয়ায় উড়োজাহাজ ওঠানামার সার্বিক উন্নত অবস্থা বিরাজ করছে। ঈদের সময় সাধারণ যাত্রীদের বাস ট্রেনের টিকেটের জন্য যারপর নেই ভোগান্তি পোহাতে হয়। বগুড়ায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য রয়েছে আধুনিক স্টেডিয়াম। কয়েকটি ফোরস্টার হোটেল। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনারগুলো এখন বগুড়ায় হচ্ছে। দেশের প্রাচীন নগরী মহাস্থানগড়ে পর্যটক আগমনের সংখ্যা বেড়েছে। বগুড়া দিনে দিনে পর্যটকভূমিতে পরিণত। আন্তর্জাতিক অনেক অনুষ্ঠানের ভেন্যু করা হয় বগুড়া। দেশী-বিদেশী অনেকের আগমন ঘটে। একদার শিল্প নগরী বগুড়া পূর্বাবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। শিগগিরই অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কাজ শুরু হচ্ছে। এখনই বগুড়া ব্যবসা বাণিজ্যের নগরীতে পরিণত। বগুড়ার লোকজন ঢাকায় দ্রুত যোগাযোগে আকাশপথের ভাবনা নিয়ে আছে।

তাদের কথা : বগুড়া থেকে রাজধানী ঢাকার সড়ক ও রেলপথে যোগাযোগে অনেকটা সময় লাগে। এক জরিপে দেখা গেছে বগুড়া-ঢাকা-বগুড়া বিমান বন্দর চালু হলে বগুড়া-ঢাকা-বগুড়া রুটে দিনে কয়েকটি ফ্লাইট চলবে। উড়োজাহাজ চলাচল লাভজনক অবস্থায় যাবে। সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।

বগুড়া জেলা প্রশাসনসূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি বগুড়া বিমানবন্দরে বাণিজ্যিক বিমানসেবা চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। তারা এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছে। কিন্তু কোনো অগ্রগতি নেই।

জেলা প্রশাসক মো. নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের প্রশাসনিক অনুমোদনের চিঠি এখনো পাওয়া যায়নি। চিঠি পাওয়ামাত্র ভূমি অধিগ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

কিছুদিন আগে সাবেক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বগুড়ার শহরতলিতে বেসরকারি সংস্থা টিএমএসএস পরিচালিত আন্তর্জাতিক মানের হোটেল ‘মম ইন লিমিটেডে’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, পুণ্ড্রবর্ধন নগরবিধৌত বগুড়া হাজার বছরের সভ্যতা লালন করে। এ এলাকায় পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে।

টিএমএসএসের নির্বাহী পরিচালক হোসনে আরা বেগম বলেন, উত্তরাঞ্চলের প্রাণকেন্দ্র বগুড়া। এখানকার মহাস্থানগড়ে বিদেশি পর্যটকেরা আসতে চান। কিন্তু সড়কপথে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা বাসে করে আসতে তাঁরা উৎসাহ হারান। বিমান সেবা চালু হলে যোগাযোগ উন্নত হবে। তখন মানুষ সহজে বগুড়ায় আসতে পারবে।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button