সারিয়াকান্দি উপজেলা

ডিপ্লোমা ছাত্রকে খুনের লোমহর্ষক বর্ণনা খুনি বিশুর

বাইক হাতিয়ে নিতেই কলেজছাত্র নাঈমকে হত্যা করা হয়

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে ডিপ্লোমা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ বর্ষের ছাত্র নাঈম ইসলাম (২০) হত্যা রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। নাঈমের অ্যাপাচি বাইক ছিনিয়ে নিতেই সারিয়াকান্দি পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অনন্ত শ্রাবণ বিশু তাকে খুন করেছেন। শুক্রবার দুপুরে বগুড়ার গাবতলী ও সারিয়াকান্দি সার্কেলের সিনিয়র এএসপি তাপস কুমার পাল এ তথ্য জানিয়েছেন।

আসামিদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গ্রেফতার মনিরুজ্জামান মনির ও আতিকুর রহমান নিহত নাঈম ইসলামের স্কুলজীবনের বন্ধু। ওই দুজনের মাধ্যমে নাঈমের সঙ্গে অনন্ত শ্রাবণ বিশু, সিহাব বাবু, অন্তর ও সাব্বিরের সঙ্গে পরিচয় হয়।ছাত্রলীগ নেতা বিশু ও তার এক সহযোগী নাঈম ইসলামের অ্যাপাচি বাইকটি ছিনিয়ে নিতেই তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। গত ১৫ নভেম্বর সারিয়াকান্দির কালীতলা গ্রোয়েন বাঁধ এলাকায় বেড়ানোর নামে বন্ধুরা নাঈমকে ডেকে নেয়। এদের মধ্যে সাব্বিরের সঙ্গে গার্লফ্রেন্ড ছিল। নাঈমকে সারিয়াকান্দি বাজার এলাকায় অনন্ত শ্রাবণ বিশুর ভাড়া বাসায় নেয়া হয়। সেখানে নাঈমকে পানির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশেয়ে পান করানো হয়। এর পর নাঈমকে এক বোতল অ্যালকোহল পান করানোর পর সে অচেতন হয়ে পড়ে। এর পর রাতে বিশু ও তার সহযোগী ছুরি দিয়ে অচেতন নাঈমের পেটে পর পর চারটি আঘাত করে। এর পর বিশু নিজে একটি আঘাত করে। এর পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে বিশু পা ধরে থাকে এবং তার সহযোগী গলা কেটে নাঈমের মৃত্যু নিশ্চিত করে।পরিচয় গোপন করতে পরে লাশ কাঁথায় মুড়িয়ে বাড়ি থেকে প্রায় ৫০ গজ দূরে একটি মাঠে নিয়ে লাশের ওপর কাগজ ও পলিথিন ব্যাগ রেখে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে নাঈমের লাশ ঝলসে বিকৃত হয়ে যায়। বিশু তার এক বিশ্বস্ত সহযোগীর কাছে নাঈমের বাইকটি রাখতে দেয়।

এদিকে নাঈম বাড়িতে না ফিরলে তার মা নাজমা বেগম ও অন্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। নাঈমকে খুঁজতে তাদের সঙ্গে বিশু ও অন্যরা অংশ নেয়। নাজমা বেগম সারিয়াকান্দি থানায় ছাত্রলীগ নেতা বিশুসহ উল্লিখিত ছয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। এর পর গ্রামের একটি মাঠে ওই বাইক ও নাঈমের রক্তমাখা শার্ট পাওয়া যায়। এ ছাড়া পুলিশ বিশুর ভাড়া বাড়ির ঘর থেকে রক্তমাখা ছুরি, নাঈমের শিক্ষা আইডি, মানিব্যাগ, জুতা ও রক্তমাখা কম্বল, বালিশ এবং অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করে।

পলাতক সাব্বির বাদে গ্রেফতার পাঁচজনকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড চাইলে ম্যাজিস্ট্রেট দুদিন করে মঞ্জুর করেন। বৃহস্পতিবার বিকালে শুধু বিশু আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। পরে পাঁচজনকেই জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা খয়ের উদ্দিন জানান, হত্যাকাণ্ডে বিশুর ওই সহযোগী এবং সাব্বিরকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। আর তদন্তের স্বার্থে গ্রেফতার অপর চারজনকে হাজতে রাখা হয়েছে। বিশুর সহযোগী ও সাব্বির গ্রেফতার হওয়ার পর তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

অন্যদিকে সারিয়াকান্দি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহান সাগর বিবৃতিতে জানিয়েছেন, অনন্ত শ্রাবণ বিশু তাদের সংগঠনে নেই। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে তাকে গত ৪ নভেম্বর সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

 

তথ্যসুত্র: PNS_NEWS24

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button