নন্দীগ্রাম উপজেলা

বগুড়ার নন্দীগ্রামে বিরল প্রজাতির হুতোম পেঁচা উদ্ধার



বগুড়ার নন্দীগ্রামে শুক্রবার রাতে উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের বীরপলি গ্রামের একটি জলাশয়ের পাড় থেকে বিরল প্রজাতির একটি হুতোম পেঁচা উদ্ধার করা হয়েছে।


এ হুতোম পেঁচা কে উদ্ধার করেছে ওই গ্রামের কৃষক নুর নবী। তিনি জানান, শুক্রবার রাতে এক আত্বীয় বাড়ি থেকে ফেরার সময় রাস্তার পার্শ্বে একটি জলাশয়ের পাড়ে হুতোম পেঁচা কে দেখতে পাই। অন্ধকারে তার চোখ দেখে আমি ভিষণ ভয় পাই। তারপর তাকে উড়ে দেওয়ার জন্য তাড়া করি কিন্তু সে উড়ে যেতে পারে না। আস্তে আস্তে হাঁটতে থাকে। তখন আমি তাকে সেখান থেকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি। এখন তাকে কবুতরের খাঁচায় রেখে খাবার দিচ্ছি। বর্তমানে সে একটু একটু করে সবল হয়ে উঠছে। তিনি আরও জানান, গুরুজনদের নিকট থেকে শুনেছি হুতোম পেঁচা অশুভ ও অমঙ্গলের প্রতীক। পেঁচা দেখামাত্র তাকে ধরে পুড়িয়ে মারতে হয়। অশুভ পেঁচা ডাকলে ঘরে ওঠার সিঁড়িতে পানি ঢেলে দিতে হয়। অন্ধকার রাতে পেঁচার মুখোমুখি হলে গায়ে থুথু ছিটাতে হয়। এতে সব ধরনের অকল্যাণ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এরপরও আমি তাকে মেরে ফেলিনি। আমি তাকে সুস্থ করার চেষ্টা করছি।


নন্দীগ্রাম মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পাখি প্রেমিক মোবারক আলী বলেন, হুতোম পেঁচাকে কেউ পেঁচা, কেউ ধুধু, আবার কেউ লক্ষ্মী বলে থাকে। এরা রাতে বিচরণ করে বলে এদেরকে নিশাচর পাখি বলা হয়ে থাকে। অনেক সম্প্রদায়ে কাছে পূজনীয় একটি পাখি পেঁচা। এরা জোড়ায় জোড়ায় থাকতে পছন্দ করে। বিভিন্ন রকমের ক্ষতিকারক পোকা-মাকড়, পাখির ছানা, ইঁদুর কে এরা খাদ্য হিসাবে খেয়ে থাকে। পেঁচা সাধারণত গাছের কোটরে কিংবা দালানের ফাঁক-ফোকরে বসবাস করে। বৃক্ষ নিধন ও আবাদ করতে জমিতে বিভিন্ন প্রকার কীটনাশক ব্যবহার এবং শিকারের কারণে হুতোম পেঁচা আজ হারিয়ে যেতে বসেছে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা শফিউল আলম জানান, হুতোম পেঁচা উদ্ধারের বিষয়টি শুনেছি। দ্রুত পাখিটি উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। তিনি আরও জানান, হুতোম পেঁচা এখন বিরল প্রজাতিতে পরিণত হয়েছে। আমাদের স্বার্থে এদের বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন।

মুনিরুজ্জামান মুুনির

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button