বগুড়া সদর উপজেলা
বগুড়ার লাইব্রেরিতে দুষ্প্রাপ্য পাণ্ডুলিপি !

সাজানো গোছানো পরিপাটি এক কক্ষ। বগুড়া উডবার্ন সরকারি গণগ্রন্থগার ভবনের পশ্চিমে সেই কক্ষে বসে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন লাইব্রেরিয়ান মো. রোকনুজ্জামান। মাঝখানে বেশ কিছুটা স্থান। তার পূর্ব দিকে রিডিং রুম। রোকনুজ্জামানের কক্ষের পশ্চিম-দক্ষিণ কোনায় স্টিলের ফাইল কেবিনেট। তাতে বেশ কয়েকটি ড্রয়ার। পকেট থেকে চাবির বের করে নিচের দিকের একটি ড্রয়ার খোলেন তিনি। বের করেন লাল কাপড়ে মোড়ানো দু’টি প্যাকেট। প্যাকেট দু’টি সবুজ ফিতায় বাঁধা। সেগুলোর একটি টেবিলে রাখলেন। ফিতার প্যাঁচ খুলে ফেললেন। দু’টি প্যাকেটের ওপরে রাখা ছোট আকারের বিশেষ ধরনের কালো রঙের তক্তা সরান। বেরিয়ে আসে থরে থরে রাখা হাতে লেখা অসংখ্য কাগজ। এগুলো হলো বহু পুরণো দুষ্প্রাপ্য পাণ্ডুলিপি। যেন এই পাণ্ডুলিপি লাল সালুতে মোড়ানো ছিল। এরমধ্যে শ্রী মদজ্ঞানেন্দ্র কুমার ভট্টাচার্য্যর পদ্মপুরাণ ও গোবিন্দ কথামৃত অন্যতম। তুলট কাগজে অত্যন্ত সুন্দরভাবে লেখা পাণ্ডুলিপিগুলো।
১৯৭৫ সালের জুনে প্রকাশিত এজেএম সামছুদ্দীন তরফদারের লেখা ‘দুই শতাব্দির বুকে’ (বগুড়ার মুক্তি সংগ্রাম) তৃতীয় খণ্ড, ১৯৭০ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত তারই লেখা ‘দুই শতাব্দির বুকে’ (বগুড়ার ইতিহাস) প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড, ১৯২৯ সালে প্রকাশিত প্রভাস চন্দ্র সেন এর ‘বগুড়ার ইতিহাস’সহ বেশ কিছু দুষ্প্রাপ্য পুস্তকও বের করেন তিনি। এসব পাণ্ডুলিপি ও প্রাচীন বেশ কিছু বই সংরক্ষণের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন রোকনুজ্জামান। তবে তার এ চেষ্টা পুরোপুরি সফল করতে অবকাঠামোগত বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন। পাণ্ডুলিপিসহ প্রাচীন অসংখ্য বই আলমারিতে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। ইচ্ছে থাকলেও পাঠকের হাতে এসব বই দেওয়া যায় না। কারণ তাতে অমূল্য সম্পদ নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় রয়েছে। তবে কেউ দেখতে চাইলে দেখানো হয়।
রোকনুজ্জামান বলেন, সরকারিভাবে পুরো সিস্টেমকে ডিজিটালাইজ করা গেলে এসব পাণ্ডুলিপিসহ পাঠক সব ধরনের বই পড়ার সুযোগ পাবেন।