বগুড়ার ইতিহাস

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মরহুম লুৎফর রহমান সাহেবের বাড়ি বগুড়া


ব্যাক্তিগত পরিচিতিঃ মরহুম লুৎফর রহমান সাহেব ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে বগুড়া জেলার ফুলকোটে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম দেরাছ উল্লা সরকার এবং মাতা মরহুমা আসাতুন নেছা খাতুন। মরহুম ডাঃ আফাজ উল্লাহ সরকার সাহেব তাহাঁর চাচা ছিলেন এবং বগুড়া জেলার প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও দস্যু বনহুর সিরিজের লেখিকা বেগম রোমেনা আফাজ তাহাঁর চাচী ছিলেন।
শিক্ষাজীবনঃ মরহুম লুৎফর রহমান সাহেব ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে প্রথম বিভাগে এম.এ ডিগ্রী লাভ করেন।


পেশাগত জীবনঃ মরহুম লুৎফর রহমান সাহেব রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে এম.এ ডিগ্রী লাভ করিবার পর তিনি পাকিস্থানের করাচীতে মনিটরিং বিভাগে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে এক বছর সময় দায়িত্ব পালন করেন।অতপঃর তিনি ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন হাবিব ব্যাংকে (করাচী) যোগদানের মাধ্যমে ব্যাংকিং পেশা শুরু করেন। তিনি ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে হাবিব ব্যাংকের বগুড়া জেলা শাখার ব্যাবস্থাপক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহন করেন।


তিনি ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে ব্যাংক কার্যক্রম সম্পর্কে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য লন্ডন গমন করেন। অতঃপর তিনি ফ্রান্স, জার্মানি, বৈরুত, ইত্যাদি দেশে গমন করেন। তিনি জুলাই ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের প্রধান ব্যাবস্থাপক হিসেবে যোগদান করেন।


ব্যাংকিং জগতে সিএসআর ও গ্রিন ব্যাংকিং ধারণার আদি পুরুষ লুৎফর রহমান সরকার ১৫ আগস্ট ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ৩০ এপ্রিল ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।


তিনি অগ্রণী ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ইসলামী ব্যাংক থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি প্রাইম ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।


জনাব লুৎফর রহমান সরকার ২১ নভেম্বর ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের ব্যাংকের গভর্ণর হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন এবং ২১ নভেম্বর ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে পর্যন্ত এই পদে অধিষ্টিত থাকেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি মার্কেন্টাইল ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখেন এবং উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।


মরহুম লুৎফর রহমান সরকার এদেশে ভোক্তাঋণ ধারণার প্রবর্তক। বিকল্প ও আয় থেকে দায় শোধ- এ ধরণের বিনিয়োগ প্রকল্প চালুর মাধ্যমে তিনি শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থান ও দারিদ্র বিমোচনে ভূমিকা পালন করেন।


সাহিত্য চর্চাঃ পেশাগত জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি সাহিত্য চর্চায় ভুমিকা পালন করেন।তিনি জাতীয় কবিতা পরিষদের এর উপদেস্টা ছিলেন। তাহাঁর লেখা প্রকাশিত গ্রন্থঃরম্য রচনাঃ দৈনন্দিন (১৯৬৭), সূর্যের সাত রঙ (১৯৭৬), জীবন যখন যেমন (১৯৮০), কতিপয় জনপ্রিয় কার্যকলাপ (১৯৮৮)।ছড়াঃ টিয়ে পাখির বিয়ে (১৯৭৯), নতুন বউ (১৯৮২)।


বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মরহুম লুৎফর রহমান সরকার ২৪ জুন ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে পরলোক গমন করেন।


তথ্য সংগ্রহেঃ গোলাম জাকারিয়া কনক।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button