বগুড়ার ইতিহাস
বগুড়ার শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা এ.টি.এম আইয়ুব টিটু সাহেবের জীবন চরিত্র

শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা এ.টি.এম আইয়ুব টিটু……খ্রিষ্টাব্দে বগুড়া জেলার সদর উপজেলার মালতিনগরে জন্ম গ্রহন করেন। পিতাঃ মরহুম আছালতুজ্জামান তালুকদার শিক্ষকতা পেশায় নিযুক্ত ছিলেন। তিন ভাই এবং চার বোনের মধ্য তিনি সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন। তিনি বগুড়া জেলা আওয়ামিলীগের সন্মানিত সহঃ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এ.টি.এম মূসা পেস্তা সাহেবের কনিষ্ঠ ভ্রাতা ছিলেন।
বগুড়া জিলা স্কুলে ভর্তির মাধ্যমে তিনি তাহাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন। অত্যন্ত মেধাবী কিশোর এ.টি.এম আইয়ুব টিটু ১০ম শ্রেণীর অধ্যয়নরত অবস্থায় বগুড়া জেলা ছাত্র ইউনিয়নে যোগদান করেন। নিজের প্রচেষ্টা এবং দক্ষতায় তিনি অল্প সময়ের মধ্যই সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে মনোনিত হন। কিশোর বয়সেই অকুতোভয় এ.টি.এম আইয়ুব টিটু মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণঃ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাক হানাদার বাহিনী ঢাকায় ‘অপারেশন সার্চ লাইটের’ নামে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। রংপুর থেকে পাক সেনা বাহিনী বগুড়ার দিকে অগ্রসরমান হয়েছে এই খবর শহরে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পরে। এ খবরে বগুড়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর কোনরকম অস্ত্র প্রশিক্ষণ ছাড়াই ৭১’র ২৫ মার্চ প্রায় মধ্য রাত থেকেই হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বন্দুক, লাঠি নিয়ে ছুটে আসে অনেক তরুণ। তাহাঁর মধ্য এ.টি.এম আইয়ুব টিটু একজন।
২৬ মার্চ ভোরে টিটুসহ আরও কয়জন মুক্তিযোদ্ধা অবস্থান নিয়েছিলেন বড়গোলায় ইউনাইটেড ব্যাংকের ছাদের ওপর পাকিস্তানীদের প্রতিহত করার জন্য। পাক সেনারা যখন বগুড়া শহরের ২নং রেল ঘুমটির কাছাকাছি এসে গেলে, আজাদ রেস্ট হাউজের উপর থেকে দারোগা নিজাম উদ্দিন, দারোগা নুরুল ইসলাম ও তাদের সহযোগীদের ৩০৩ রাইফেল গর্জে ওঠে। পাক সেনারা হকচকিয়ে যায়। এমন সময় ইউনাইটেড ব্যাংকের ছাদের ওপর থেকেও টিটু, হিটলু, ছুনু ও দোলনের বন্দুকও গর্জে ওঠে। হানাদারেরা দিশেহারা হয়ে পরে। এক সময় হানাদাররা এই চার জনের অবস্থান টের পায়। ছাদে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের লক্ষ করে এলোপাতারি গুলি ছুড়তে থাকলে টিটু গুলিবিদ্ধ হয়। সেখানেই লুটিয়ে পরে টিটু। শহীদ হন বগুড়ার প্রথম এবং সর্বকনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা।
তাঁকে বগুড়া স্টাফ কোয়ার্টার সংলগ্ন মালতিনগর পুলিশ ফাঁড়ির নিকটস্থ স্থানে সমাধীস্থ করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধে তাহাঁর এই অসামান্য আত্মত্যাগের প্রতি সন্মানপ্রদর্শন সরুপ বগুড়া জেলা সদরের এডওয়ার্ড পার্কস্থ একমাত্র মিলনায়তনটি “টিটু মিলনায়তন” নামে নামকরণ করা হয়।
বগুড়া লাইভ এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরন করেছে এবং তাহাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছে।