বগুড়া সদর উপজেলামুক্তিযুদ্ধ বগুড়া

বগুড়ার নামকরা মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, রাজনিতীবিদ এবং গবেষক এম আর আকতার মুকুল সাহেবের জীবন চরিত

এম আর আখতার মুকুল ৯ই আগস্ট ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলাধীন মহাস্থান অন্তগতচিংগাশপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা মরহুম সা’দত আলী আকন্দ বগুড়া জেলার স্বানামধন্য লেখক ছিলেন এবং মাতা মরহুমা খাতুন গৃহিনী ছিলেন।

এম আর আখতার মুকুল ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দে দিনাজপুর মহারাজা হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। তারপর তিনি দিনাজপুর রিপন কলেজে (ব্রাঞ্চ) ভর্তি হন। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি এই প্রতিষ্ঠান থেকে আই.এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন৷

আই.এ পাশ করার পর তিনি ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে জননিরাপত্তা আইনে কারাগারে নিক্ষিপ্ত হন এবং ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে জেলখানা থেকে সাজাপ্রাপ্ত আসামী হিসেবে পরীক্ষা দিয়ে স্নাতক পরীক্ষায় সাফল্য অর্জন করেন৷
তিনি ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন৷

এম আর আখতার মুকুল ২০ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে রাত ১২টার আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বৈঠকের সময় যে ১১ জন ছাত্রনেতা উপস্থিত হন তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম ছিলেন। অন্যান্যরা ছিলেন ভাষাসৈনিক গাজীউল হক, মুহম্মদ হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ সুলতানা, জিল্লুর রহমান, আব্দুল মোমিন, এস এ বারী এটি, সৈয়দ কামরুদ্দীন হোসেইন শহুদ, আনোয়ারুল হক খান, মঞ্জুর হোসেন, আনোয়ার হোসেন।

একজন বাংলাদেশী মুক্তিযোদ্ধা যিনি ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রচারিত স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের চরমপত্রের পরিচালক, লেখক ও কথক ছিলেন। ‘চরমপত্র’ অনুষ্ঠানটির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপক সাহস, উৎসাহ-উদ্দীপনা ও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল৷
প্র

কাশিত গ্রন্থঃ
আত্মজীবনীমুলকঃরুপালী বাতাস (১৯৭৩), রুপালী বাতাস সোনালী আকাশ(১৯৭৫), লন্ডনে ছক্কু মিয়া (১৯৮১)। প্রবন্ধঃ চরমপত্র (১৯৭১), মুজিবের রক্ত লাল (১৯৭৬), ভাসানী-মুজিবের রাজনীতি (১৯৮৪), আমি বিজয় দেখছি (১৯৮৫), চল্লিশ থেকে একাত্তর কলকাতা কেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবী (১৯৮৭), নির্বাচিত প্রবন্ধ সংকলন (১৯৮৭), ওরা চারজন (১৯৮৭), লেছড়াগঞ্জের লড়াই (১৯৮৮), একাত্তরের বর্ণমালা (১৯৮৯), একুশের দলিল (১৯৯০), মহাপুরুষ (১৯৯১), দু’মুখী লড়াই (১৯৯২), আমাকে কথা বলতে দিন (১৯৯৩), বাংলা নাটকের গোড়ার কথা (১৯৯৪), হিন্দু- মুসলিম মৌলবাদির চোখে নজরুল (১৯৯৪), কে ভারতের দালাল (১৯৯৫), একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বুদ্ধিজীবীদের ভুমিকা (১৯৯৭), বঙ্গবন্ধু (১৯৯৭), পঞ্চাশের দশকে আমরা ও ভাষা আন্দোলন (১৩৯১বঙ্গাব্দ), বায়ান্নোর জবানবন্দী (১৩৯১বঙ্গাব্দ)।

সম্পাদনাঃ বাংলাদেশের স্বাধিনতাযুদ্ধ: দলিল পত্র (এক খন্ডে সমাপ্ত, ১৯৮৮), নকশালের শেষ সুর্য (১৯৮৯), স্বাধিনতাযুদ্ধের আলোকচিত্র (১৯৮৮), আমিই খালেদ মোশারফ (১৯৯০), বিজয় একাত্তর (১৯৯১), বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলন (১৩৯১বঙ্গাব্দ)।
রম্য রচনাঃ বিচিত্র দেশে সুরমার লোক (১৯৮৪)।

সন্মাননাঃ ১. বেতার কেন্দ্রের চরমপত্রের পরিচালক, লেখক ও কথক পুরস্কার।২. মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার। ৩. সাংবাদিকতা ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার লাভ করেন।

এম আর আখতার মুকুল ২৬ জুন ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকায় পরলোকগমন করেন। তাকে বুদ্ধিজীবী গোরস্থানে সমাহিত করা হয়।

তথ্য সংগ্রহেঃ Golam Zakaria Kanak.

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button