সান্তাহার পৌরসভা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন
বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলাধীন ২৪°৪৮′২৬″ উত্তর ৮৮°৫৯′১০″ দক্ষিন ২৪°৮০’৭১” পূর্ব ৮৮°৯৮’ ৬১”পশ্চিমে অবস্থিত।
ইতিহাসঃ বৃটিশ সরকারের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণের সুবিধার্থে ১৮২১ খৃষ্টাব্দে রাজশাহী জেলা আদমদীঘি থানা পৃথক করতঃ বগুড়া জেলার সাথে গঠন করা হয়। উল্লেখ্য, তৎকালীন সময়ে পার্শ্ববর্তী নওগাঁ সদর থানা তথা নওগাঁ জেলার কোন অস্তিত্ব ছিলনা। বর্তমানে নওগাঁ সদর থানার সুলতানপুর, পার-নওগাঁ, তিলকপুর ইউনিয়ন এবং জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়ন আদমদীঘি থানার অর্ন্তগত ছিল বলে বিভিন্ন সরকারী দলিলপত্র হতে জানা যায়।
১৮০০ খৃঃ শেষ ভাগে ভারত উপমহাদেশে যে সামাণ্য কয়েকটি শহর দ্রুত আধুনিক হয়ে ওঠে সান্তাহার তার মধ্যে অন্যতম। বর্তমানে এটা সান্তাহার নামে পরিচিত হলেও এর পূর্ব নাম সুলতানপুর। মূলত তখন এটি রাজশাহী জেলার অন্তর্গত ছিল।
প্রথমে সোহরাওয়ার্দী স্কুল তার পরে মুসলিম হাই স্কুল সবশেষে সান্তাহার কলেজ। এর পূর্বে এটি ইউরোপিয় অফিসারদের উপাসনালয় ছিল। যা এখন মেয়েদের কমনরুম।
রেলওয়ে শহর বিধায় এ শহরের অধিকাংশ কলোনীগুলো র নাম এখনো ড্রাইভার কলোনি, লোকো কলোনি, সাহেবপাড়া, হার্ড রানিং রুম,ইয়ার্ড কলোনি, কুলি পাড়া, কোচোয়ান পট্টি,সুইপার কলোনি। এ শহরের একটি কলোনির না চা বাগান হলেও এখানে কোনো চা বাগান ছিলোবনা। এখানে আসামের চায়ের বাগানের শ্রমিকরা কিছু সময়ের জন্য অবস্থান করতো, মূলত তারা পশ্চিমবঙ্গ বিহার বা উরিষ্যা অঞ্চলের চা বাগানের শ্রমিক। বছরের কিছু সময় চা বাগানে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব হলে বাগানের ঠিকাদার রা তাদের চিকিৎসার জন্য রেলওয়ে হাসপাতাল সংলগ্ন স্থানে অবস্থান করতো যা এখনো চা বাগান নামে পরিচিত।
১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর বিহার বা দ্বারভাঙা সম্প্রদায়ের মানুষেরা বণ্যার পানির মতো এ শহরে প্রবেশ করে। রাজনৈতিক কারনে তারা ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে ওঠে। পাকিস্তানি শাষকদের মদদে তারা এ শহরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েক করে কয়েক বছর। তারা সান্তাহার কে দুটি ইউনিয়নে বিভক্ত করে। ১৯৬২ সালেবিহারী অধ্যুষিত শহর সান্তাহারকে আরবান এ্যারিয়া ঘোষনা করে। তার নাম দেয় খ ইউনিয়ন। এই পরিষদের প্রথম চেয়ারম্যান ছিলো আব্দুল করিম বিহারি। পিতা মকিম বিহারি তিনি সান্তাহারের স্টেশন মাস্টার ছিলেন। স্বাধীনতার পূর্ববর্তী কালে ১৭ বছর এই বিহারিরা শাষনের নামে এ এলাকার বাঙালীর উপর নির্যাতন চালায়। যার ফলশ্রুতিতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে এপ্রিল মাসের মধ্যে ৩০০০০ বিহারী নিধন হয় এ শহরে।
২২ শে এপ্রিল এই শহরে হানাদার পাকিস্তানী বাহিনী প্রবেশ করে নির্বিচারে সাধারন মানুষদের হত্যা করে। তারা হত্যা করে আধুনিক সান্তাহারের জনক জমিদার সুরেনন্দ্রনাথ তার স্ত্রী হরিভাবানী সহ সান্তাহারের বিষিষ্ট ব্যবসায়ী নূর চৌধুরি সহ তার পরিবার,এবং অসংখ্য পরিবারের মানুষ।
writer: Golam Zakaria কানাক
সুত্রঃ বগুড়া জেলা গেজেটিয়ার উইকিপিডিয়া, সান্তাহার বগুড়ার ইতিকাহিনি -মিছের আলী, Radio. নওগাঁর ইতিহাস নাটোরের ইতিকাহিনি। রানীভবানীর ইতিকাহিনী। বগুড়ার নবাব বাড়ির ইতিহাস বরেন্দ্রভুমির ইতিহাস দিনাজপুরের ইতিহাস।