ছেলেধরা আতঙ্কে বগুড়ার নুনগোলা ইউনিয়নের গ্রামবাসী

`ছেলেধরা` নিয়ে যাবে- এমন আতঙ্কে বগুড়া সদর উপজেলার নুনগোলা ইউনিয়নের রজাকপুর গ্রামের অভিভাবকরা তাদের শিশু সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না। ফলে রজাকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন কমছে। চৌদ্দ মাসে দুইটি শিশু নিখোঁজের ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দিয়েও কোনো লাভ না হওয়ায় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ও ভীত ওই গ্রামের অভিভাবকরা।
রবিবার সরেজমিনে গেলে রজাকপুর গ্রামের লোকজন জানান, ২০১৭ সালের ২৬ নভেম্বর গ্রামের আসাদ আলীর ৫ বছরের শিশুকন্যা ইশামনি নিখোঁজ হয়। ওই ঘটনায় বগুড়া সদর থানায় জিডি করা হলেও পুলিশ কোনো কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেনি। গত ২৯ মার্চ রজাকপুর পূর্বপাড়ার খায়রুল ইসলামের আট বছরের একমাত্র ছেলে মাহফুজ নিখোঁজ হওয়ার পর থানায় জিডি করা হয়। এবারও এখন পর্যন্ত পুলিশ কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারেনি।
তাদের অভিযোগ, রজাকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র মাহফুজ নিখোঁজ হওয়ার পর পাশের গ্রামের আরো তিন শিশুকে চুরি করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায় একই গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে তারেকুল ইসলাম তারু (২২)। এ ঘটনা জানাজানি হলে গ্রামবাসী তারুকে ছেলেধরা সন্দেহে গত ৩১ মার্চ আটকে ইউনিয়ন পরিষদে সোপর্দ করেন। পরে থানা পুলিশ তাকে না নেওয়ায় পরিষদ থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকে ওই যুবক সপরিবারে আত্মগোপন করে আছেন।
নিখোঁজ মাহফুজের বাবা খায়রুল জানান, ২৯ মার্চ দুপুরে তার ছেলে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরে। এরপর বিস্কুট কিনতে মায়ের কাছ থেকে ৫ টাকা নিয়ে গ্রামের দোকানে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে পরদিন ৩০ মার্চ বগুড়া সদর থানায় জিডি করেন তিনি। কিন্তু রবিবার পর্যন্ত পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করেনি।
রজাকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলাম বলেন, মাহফুজ নিখোঁজ হওয়ার পরদিন থেকে স্কুলে ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিতি একেবারেই কমে গেছে। আতঙ্কে শিশুরা আসছে না।
ঢাকাটাইমস