জাতীয়

বাঁচানো গেলো না অগ্নিদগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতকে

আগুনে ঝলসে দেয়া ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বুধবার (১০ এপ্রিল) রাতে তিনি মারা যান বলে
নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসকরা।

ওই অগ্নিদগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রী ঢামেক হাসপাতালে লাইফ
সাপোর্টে ছিলেন। তাঁর শরীরের ৭৫ শতাংশ আগুনে পুড়ে
গেছে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। আগুনে
ক্ষতিগ্রস্ত মেয়েটির ফুসফুসকে সক্রিয় করতে গতকাল
মঙ্গলবার অস্ত্রোপচার করা হয়।


গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে যৌন
নিপীড়নের অভিযোগে মামলা করেন মেয়েটির মা।
ছাত্রীর স্বজনদের অভিযোগ, মামলা প্রত্যাহারে রাজি
না হওয়ায় অধ্যক্ষের পক্ষের লোকজন ছাত্রীটির গায়ে
আগুন ধরিয়ে দেয়। গত শনিবার গুরুতর আহত অবস্থায় ওই
মাদ্রাসাছাত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়।


লাইফ সাপোর্টের যাওয়ার আগে গত রোববার অগ্নিদগ্ধ ওই
ছাত্রী চিকিৎসকদের কাছে জবানবন্দি দেন। তিনি বলেন,
নেকাব, বোরকা ও হাতমোজা পরিহিত চারজন তাঁর
গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। ওই চারজনের একজনের নাম ছিল
শম্পা।


পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি)
খন্দকার গোলাম ফারুক গতকাল সোনাগাজীতে
সাংবাদিকদের বলেন, শম্পা নামের যে হামলাকারীর
কথা অগ্নিদগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রী বলেছেন, সেই শম্পাকে
পুলিশ গতকাল সকালে সোনাগাজীর মঙ্গলকান্দি
ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে
সোনাগাজী থানার পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার করা নারীর
নাম উম্মে সুলতানা ওরফে পপি।


গতকাল মঙ্গলবার মাদ্রাসাছাত্রীটির পরিবার বলেছে,
স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের প্রতি তারা আস্থা রাখতে
পারছে না। হাত-পা বেঁধে কেরোসিন ঢেলে মেয়েটিকে
পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনাকে পুলিশ ভিন্ন খাতে নেওয়ার
চেষ্টা করছে। এমনকি মামলার এজাহার নিয়েও পুলিশ
কূটচাল চেলেছে।


পরিবারের এমন অভিযোগের পর বুধবার সোনাগাজী
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোয়াজ্জেম
হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর পাশাপাশি
উপজেলার মাদ্রাসাছাত্রীকে হত্যাচেষ্টার মামলাটি
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর
করা হয়েছে।


এ দিকে আজ বুধবার অভিযুক্ত অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার
সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ফেনীর জ্যেষ্ঠ
বিচারিক হাকিম সরাফউদ্দিন। ওই মাদ্রাসার প্রভাষক
আফসার উদ্দিন ও ছাত্র আরিফের পাঁচ দিন করে রিমান্ড
মঞ্জুর করেন একই আদালত।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button