বগুড়ায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৪ লাখ পশু

মুসলমানদের ধর্মীয় দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব ঈদুল আযহা আসন্ন। কোরবানিকে সামনে রেখে গবাদি পশু পালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন বগুড়ার খামারিরা। খামারিরা অতি যত্নে কোরবানির গবাদি পশু প্রস্তুত করে তুলছেন মুনাফা লাভের আশায়। আর এই ঈদ উপলক্ষে এবার জেলায় মোট প্রায় ৪ লাখ পশু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন এ অঞ্চলের খামারিরা। গত বছর কোরবানিতে এর সংখ্যা ছিল ২ লাখ ২১ হাজার ৪৯১টি। জেলায় এবার দুই লক্ষাধিক পুশ কোরবানি হবে আর বাকিগুলো ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় যাবে। ইতিমধ্যে কিছু পশু জেলার বিভিন্ন হাটে বিক্রি হয়েছে। এদিকে এ বছর ঈদুল আযহায় বগুড়ায় ৩ লাখ ৪ হাজার ৪৭০টি গবাদি পশু কোরবানির জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। সেই হিসেবে এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বাড়তি ৮২ হাজার ৪২৯টি কোরবানিযোগ্য গবাদি পশু বেশি রয়েছে। জেলার খামারি আবু জাফর ও আমিনুল ইসলাম জানান, ‘প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আমরা ২০/২৫টি পশু পালন করছি। এগুলো এখন হাটে তোলা হচ্ছে। কিন্তু হাট-বাজারগুলোতে পশুর চাহিদা অনুযায়ী দর নেই। সেই কারণে পশু বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। গত বছরের মতো বাজার দর থাকলে লাভের মুখ দেখা সম্ভব হবে, অন্যথায় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তবে, এবার বাজার দর মন্দ হওয়ার সম্ভাবনাটাই বেশি। বর্তমানে পশুর দাম এমনটা থাকলে খামারিরা মোটা অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে।’ বগুড়া সদরের খামারি মোজাম্মেল হোসেন ও মকবুল হোসেন জানান, ‘পশু খাদ্যর দাম বেশি হওয়ায় আমাদের পশু পালনে ব্যয় বাড়ছে। কিন্তু সে অনুযায়ী বাজারের পশুর দাম নেই। সেই কারণে এখনও পশু বিক্রি করা হয়নি। ভালো দামের আশায় আছি। বুধবারের হাট-বাজারে ভালো দাম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’ গাবতলী উপজেলার খামারি মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর ও জয়নাল আবেদীন জানান, ‘ভারত থেকে গরু আসছে, ফলে এবারের কোরবানির হাট-বাজারের এখনও চাহিদা মতো পশুর দাম হচ্ছে না। সেকারণে আমরা খামারিরা পশুর ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে অনেকটাই দুশ্চিন্তায় আছি। তবে ঈদের আরো কিছুদিন বাকি আছে, এখন সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। পশুর ভালো দর পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি।’ জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডা. রফিকুল ইসলাম জানান, ‘বগুড়ায় কোরবানিযোগ্য মোট গবাদি পশুর সংখ্যা ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৮৯৯টি। এর মধ্যে ২ লাখ ১১ হাজার ১০৮টি গরু-মহিষ এবং ১ লাখ ৭৫ হাজার ৭৯১টি ছাগল-ভেড়া রয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে গবাদি পশু মোটাতাজাকরণের জন্য বগুড়ায় গরু-মহিষ মোটা তাজাকরণে মোট ১ হাজার ৫৬০ জন ও ১ হাজার ৩৯০ জনকে ছাগল মোটা তাজাকরণের জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এ জেলায় মোট খামারি ২১ হাজার ১৯৪ জন।’ তিনি আরো জানান, ‘কোরবানির পশুর প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ৯০ জন চিকিৎসককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। প্রাণিস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার না করার জন্য খামারিদের সচেতন করা হয়েছে এবং হচ্ছে। এদিকে অন্য বছরের মতো হাটগুলোতে একাধিক ভেটেরিনারি দল কাজ করবে।’ ডা. রফিকুল আরো জানান, ‘গত বছরগুলোর মতো জেলায় এবারও কোরবানি পশুর কোনো ঘাটতি হবে না। বরং অনেক পশু জেলার বাইরে যাবে। ।। আলমগীর হোসেন, বগুড়া।।