নান্দনিক ইনিংস খেলে ফিরলেন বগুড়ার মুশফিক
দলীয় ৫৮ রানে সৌম্য-তামিমকে হারিয়ে চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে দলকে টেনে তোলেন মুশফিকুর রহিম। নেমেই লংকান বোলারদের পাল্টা তোপ দাগাতে থাকেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। যোগ্য সমর্থন পান অপর ব্যাটসম্যানের কাছ থেকেও। তাতে চাপ কাটিয়ে ওঠেন টাইগাররা।
এক পর্যায়ে মুশফিক-মিঠুনের জুটি জমাট বেঁধে ওঠে। তাতে ছোটে সফরকারীরা। পথিমধ্যে ফিফটি তুলে নেন মুশি। তবে এরপর আর স্থায়ী হতে পারেননি তিনি। ৪৬ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় কাঁটায় ৫০ রান করে ওয়ানিন্দুর শিকার হন নির্ভরতার প্রতীক।
এ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৩ উইকেটে ১৪৩ রান করেছে বাংলাদেশ। মিঠুন ৩৪ রান নিয়ে ব্যাট করছেন। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
মূল সিরিজ মাঠে গড়ানোর আগে শ্রীলংকা বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশের বিপক্ষে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচ খেলছে বাংলাদেশ। লংকানদের দেয়া ২৮৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুভসূচনা করেন টাইগাররা। ভালো শুরুর পর হঠাৎ সাজঘরে ফেরেন সৌম্য।
লাহিরু কুমারার বলে আমিলা অপোন্সোকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। দলীয় ৪৫ রানে ফেরার আগে করেন ১৩। সেই রেশ না কাটতেই কাটা পড়েন ড্যাশিং ওপেনার। সেই লাহিরুর বলে কাসুন রাজিথাকে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। প্যাভিলিয়নের পথ ধরার আগে করেন ৬ চারে ৩৭ রান।
এর আগে বল হাতে প্রস্তুতির শুরুটাও দুর্দান্ত হলেও শেষ পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বড় সংগ্রহ গড়ে শ্রীলংকা। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৮২ রান করে তারা। সোমবার কলম্বোর পি সারা ওভালে টস জিতে আগে ব্যাটিং বেছে নেন লংকানরা। ফলে প্রথমে ফিল্ডিং করতে নামে বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম ওভারেই অধিনায়ক নিরোশান ডিকভেলাকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন রুবেল হোসেন।
দ্বিতীয় উইকেটে প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আভাস দেন দানুশকা গুনাথিলাকা ও ওশাদা ফার্নান্দো। তবে বাদ সাধেন এ পেসার। মোসাদ্দেক হোসেনের ক্যাচ বানিয়ে ওশাদাকে প্যাভিলিয়নে পাঠান রুবেল।
খানিক পরই ইতিবাচক শুরু করা গুনাথিলাকাকে বিদায় করে দেন তাসকিন আহমেদ। সেই মোসাদ্দেকেরই তালুবন্দি করেন তিনি। আউট হওয়ার আগে ৫ চারে ২৬ রান করেন গুনাথিলাকা। মাত্র ৩২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়েন স্বাগতিকরা।
সেখান থেকে দলকে কক্ষে ফেরানোর লক্ষ্যে জুটি বাঁধেন ভানুকা রাজাপাকশে ও শেহান জয়সুরিয়া। তাদের ৮২ রানের জোটে বড় সংগ্রহের ভিত পায় শ্রীলংকা। তবে এ দুজন ফিরতেই আবার পথ হারায় দলটি।
দলীয় ১১৪ রানে রাজাপাকশেকে সাব্বির রহমানের তালুবন্দি করেন সৌম্য। ফেরার আগে ৪ চারে ৩২ রান করেন তিনি। পরক্ষণেই লংকান শিবিরে ছোবল মারেন মোস্তাফিজুর রহমান। অ্যাঞ্জেলো পেরেরাকে আউট করেন তিনি।
পরে পথের কাঁটা হয়ে থাকা জয়সুরিয়াকে ফিরিয়ে দেন সৌম্য। ততক্ষণে ৫ চারে ৫৬ রান করে ফেলেন তিনি। দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে শ্রীলংকা। সেখান থেকে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন দাসুন শানাকা ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।
৪৯ রানের জুটি গড়ে মাঝের ধাক্কা সামাল দেন তারা। দলীয় ১৯৫ রানে ব্যক্তিগত ৩২ রান করে হাসারাঙ্গা ফিরলেও বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যান লংকানরা। পরে রানের গতি বাড়িয়ে চলেন শানাকা। শেষদিকে তার ঝড়ে এলোমেলো হয়ে যায় বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপ।
যোগ্য সহযোদ্ধার সমর্থন জোগান আকিলা ধনাঞ্জয়া। অবশ্য বেশি রান করতে পারেননি তিনি। তামিমের ম্যাজিক্যাল থ্রোতে রানআউট হয়ে ফেরেন তিনি। তবে শানাকা তাণ্ডব চলতেই থাকে। ব্যাটকে তলোয়ার বানিয়ে লাল-সবুজ জার্সিধারী বোলারদের কচুকাটা করেন তিনি।
শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৮২ রান করে শ্রীলংকা। ৬৩ বলে ৬টি করে চার-ছক্কায় ৮৬ রানের হার না মানা টর্নেডো ইনিংস খেলেন শানাকা। নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে তাকে সঙ্গ দেয়া অপোন্সো ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন।