বগুড়া সদর উপজেলা

বন্যার পানি কমছে, বাড়ছে নদীভাঙনের ঝুঁকি

বগুড়ায় বন্যার পানি কমতে থাকলেও নদীভাঙন প্রবল হয়ে উঠেছে। যমুনা ও বাঙ্গালী নদীর ভাঙনে এরই মধ্যে সোনাতলা উপজেলার কয়েকটি গ্রামের দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীভাঙন অব্যাহত থাকায় অন্যত্র সরিয়ে নিতে হয়েছে আরো শতাধিক ঘরবাড়ি।

এবার বগুড়ার তিনটি উপজেলায় ব্যাপক বন্যা দেখা দেয়। এর মধ্যে সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলার পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও সোনাতলা উপজেলায় বাঙ্গালী নদীর পানি বিপত্সীমার প্রায় ৯৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে গতকালও। সেই সঙ্গে বাড়ছে বানভাসির সংখ্যাও। বন্যার পাশাপাশি নদীভাঙন আতঙ্ক আরো বাড়িয়ে দিয়েছে মানুষের মধ্যে।

সোনাতলার বানভাসিরা বলছেন, এবারের বন্যায় উপজেলার তেকানীচুকাইনগর ইউনিয়নের খাবুলিয়া চর, দাউদেরপাড়া চর, মহব্বতেরপাড়া চর, সরলিয়া চর, জন্তিয়ারপাড়া, মহেশপাড়া ও পূর্ব তেকানী, পাকুল্লা ইউনিয়নের রাধাকান্তপুর, মির্জাপুর, পূর্ব সুজাইতপুর, শ্যামপুর, নিশ্চিন্তপুর, উত্তর করমজা, মোনারপটল, সাতবেকী, জোড়গাছা ইউনিয়নের হলিদাবগা, পোড়াপাইকর, গুড়াভাঙ্গা, সদর ইউনিয়নের রংরারপাড়া ও রানীরপাড়া এলাকায় যমুনা ও বাঙ্গালী নদীর ভাঙনে দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের আশঙ্কায় আরো শতাধিক ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিতে হয়েছে।

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার তেকানীচুকাইনগর ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শামছুল হক জানান, তার ইউনিয়নের সাতটি চরের অর্ধশত ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও গাছপালা, জায়গাজমি এবং ফসলের মাঠ যমুনা নদী ও বাঙ্গালী নদীর পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বানভাসিরা চলে যাচ্ছে স্বজনের বাড়ি। কেউবা উঁচু স্থানে গিয়ে মাচা করে আশ্রয় নিয়েছে। অনেক পরিবার বাঁধে খোলা আকাশের নিচেসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।

বগুড়া জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজাহার আলী মন্ডল জানান, গত তিনদিনের বন্যার পানিতে সোনাতলা উপজেলায় কমপক্ষে ৭৩টি গ্রাম নিমজ্জিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ। সোনাতলায় এখন পর্যন্ত ১২০টি বাড়ি সম্পূর্ণরূপে ভেঙে যাওয়ার হিসাব পাওয়া গেছে। আংশিক ভাঙনের মুখে পড়েছে ৭১০টি। রাস্তার ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২২ কিলোমিটার। সাড়ে পাঁচ হাজার হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ত্রাণ দেয়া অব্যাহত রয়েছে।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button