১৫ হাজার টাকায় শুরু করা ব্যবসার পুঁজি এখন ৮০ লাখ টাকা!
বগুড়ার মেয়ে শাহনাজ ইসলাম শিল্পী। শহর জুড়ে এখন পরিচিত ‘শিল্পী আপা’ নামে। বর্তমানে বগুড়া শহরের অভিজাত এলাকা জলেশ্বরীতলায় বুটিক শপ, ফ্যাশন হাউজ ও চাইনিজ রেস্টুরেন্টের কর্ণধার শাহনাজ। নাম দিয়েছেন ‘শখ’। এসব প্রতিষ্ঠানের বেশ নামডাক শহর জুড়ে। একসঙ্গে সংসার ও ব্যবসা সামলে শুধু সফলই হননি তিনি, ব্যবসার আয়ে এক সন্তানকে পড়াশোনার জন্য বিদেশেও পাঠিয়েছেন। অন্য দুই সন্তানকে পড়াচ্ছেন নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। একজন সফল নারী হিসেবে শহর জুড়ে এখন অনেক পরিচিতি তার। শখ থেকে সফল নারী উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প বলেছেন শাহনাজ : হাতের কাজের আগ্রহ ও শখ ছিল আমার। মাথায় এল শখের এই কাজ করে আমি ঘরে বসে বাড়তি আয় করতে পারি। এরপর বগুড়ায় মালতিনগরের বাসায় ২০১৬ সালে ১৫ হাজার টাকার পুঁজিতে বুটিক হাউজ খুলে বসলাম। ভালো সাড়া পেলাম। পরিবার থেকেও উৎসাহ মিলল। শিল্পী বলেন, এক বছরের মাথায় জলেশ^রীতলায় পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে ‘শখ’ বুটিক শপ খুলি। নিজেই ডিজাইন করতাম। কারিগররা বাড়িতে কাজ করতেন। অল্পদিনেই শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়ল শখের পরিচিতি। তিনি আরও বলেন, নিজেই কাঁচামাল কিনতাম। নিজেই ব্যাংকের সব কাজ সামলাতাম। পাইকারি অর্ডার নিতাম। একজন নারী হয়ে দোকানে বসে ক্রেতা সামলানোর বিষয়টি তখন অনেকে ভালো চোখে দেখেননি। কিন্তু স্বামী শফিকুল ইসলাম ব্যবসায় উৎসাহ দিতেন। এরপর আর থেমে থাকতে হয়নি। ব্লক, বাটিক ও নকশার কাজ করা সালোয়ার-কামিজ, থ্রিপিস, শাড়ি, বিছানার চাদর, কুশন কভার, শাল-চাদরের ব্যাপক চাহিদা বাড়তে লাগল। এখন তার দোকানে ৮০ লাখ টাকার পুঁজি খাটছে। শখের সালোয়ার-কামিজ ১ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার ২০০, শাড়ি ১ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৮০০, বেডকভার ১ হাজার ৮০০ থেকে ৫ হাজার, শাল-চাদর ৫০০ থেকে ৫ হাজার, কুশন কভার ২০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শিল্পীর সাফল্যের গল্প এখানেই শেষ নয়। বড় ছেলেকে পড়াশোনার জন্য কানাডা পাঠিয়েছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি সেখানকার একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করে ছেলেটা। ওর পরামর্শে এক বছর আগে ৫০ লাখ টাকা খরচ করে ‘শখ’ নামে একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট চালু করেছি। পোশাক ও খাবারকে বিশ্বজুড়ে তুলে ধরাটাই এখন আমার বড় শখ। 🖊 মানসুরা বেগম