বগুড়ার শিবগঞ্জে জ্বর, সর্দিতে মারা যাওয়া যুবকের করোনা ছিলোনা
বগুড়ার শিবগঞ্জের মাসুদ রানা করোনা ভাইরাসে মারা যায়নি, বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন।i
গত ২৮ মার্চ শনিবার সকালে মাসুদ রানার মৃত্যুর পর তার নমুনা সংগ্রহ করে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছিল। তার ফলাফল আইইডিসিআর থেকে ৩০ মার্চ সকালে ইমেইলে সিভিল সার্জনের দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। তাতে দেখা যায় মাসুদ রানা নামে সেই ব্যক্তির ক্ষেত্রে নেগেটিভ রেজাল্ট এসেছে। অর্থাৎ তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন না এমনটি জানান, বগুড়া সিভিল সার্জন অফিসার মোঃ গাউসুল আজিম চৌধুরী।
এদিকে নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পেয়ে এলাকায় লকডাউন প্রত্যাহার করে নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ২৮ শে মার্চ মাসুদ রানা মৃত্যুর ঘটনায় আশপাশের ১৫টি বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করেন স্থানীয় প্রশাসন। পরে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা মৃতদেহ থেকে নমুনা হিসেবে মুখের লালা সংগ্রহ করে ঢাকায় আইইডিসিআরএ প্রেরণ করেন।
এছাড়া আইইডিসিআরের নির্দেশনা অনুযায়ী মৃত ব্যক্তিকে সংক্রমক ব্যাধি আইন অনুযায়ী দাফন করে স্থানীয় প্রশাসন।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর কবীর বলেন, ওই বাড়িসহ পার্শ্ববর্তী ১৫টি বাড়িকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল। আইইডিসিআর থেকে নমুনা পরীক্ষার ফলাফল জানার পর সোমবার দুপুরে ওই এলাকার লকডাউন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
গেলো শনিবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শিবগঞ্জ উপজেলার ময়দানহাটা ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের বড়পুকুরিয়া নামক স্থানে পীরের মাজারের পার্শ্বে সরকারি খাস জমিতে মরদেহ দাফন করা হয়।
এর আগে শনিবার (২৮ মার্চ) সকালে শিবগঞ্জ উপজেলার মহব্বত নন্দীপুর গ্রামে স্ত্রীর কর্মস্থল এলাকায় ভাড়া বাসায় মারা যান ওই ব্যক্তি। করোনা উপসর্গ নিয়ে ঢাকা থেকে গত মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) তিনি সেখানে আসেন।
করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ার খবরে এলাকা জুড়ে করোনা আতংক ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় প্রশাসন সেখানকার ১৫ টি বাড়ি লকডাউন ঘোষনা করেন। এরপর স্বাস্থ্য বিভাগ নিশ্চিত হওয়ার জন্য মরদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। বিকেলের দিকে মরদেহ দাফন নিয়ে দেখা দেয় বিপত্তি। গ্রামের লোকজন সেখানে দাফনে আপত্তি জানায়।
উপজেলার সোবাহানপুর বড় পুকুরিয়া পীরপল নামক স্থানে কবর খনের কাজ শুরু করার সময় ময়দান হাটা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মেজবাউল হোসেন নেতৃত্বে গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওঠেন এবং কবর খননে বাধা দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাহিরে যাওয়ার আশংকায় বিকেল ৪ টার পর ওই গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এরপর উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ রিজু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলমগীর কবীর, থানার ওসি মিজানুর রহমান সেখানে যান। পুলিশ গ্রামের লোকজনকে সেখান থেকে সরিয়ে ধর্মীয় বিধান অনুয়াযী তিনজন গ্রাম পুলিশ ও হাসপাতালের একজন ওয়ার্ড বয়ের সহযোগীতায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টর দিকে মরদেহ দাফন করা হয়।