উপজেলাশাজাহানপুর উপজেলা

বগুড়ায় চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতাল থেকে রোগী ফেরতের অভিযোগ

বগুড়ার শাজাহানপুরে করোনাভাইরাস উপসর্গ নিয়ে পরীক্ষার জন্য এক দম্পতি প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে গেলেও তার নমুনা পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বাড়িতে ফেরৎ পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে।

করোনা উপসর্গ যুক্ত দম্পতি হলো- শাজাহানপুর উপজেলার খাদাশ হাটপাড়া এলাকার আবদুল গফফার এর ছেলে ফরহাদ হোসেন শ্যামল (৩২) এবং তার স্ত্রী সাজেদা খাতুন (২৬)। স্থানীয় গোহাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আতোয়ার তালুকদার ফজু এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

প্রতিবেশীরা জানান, ১০-১৫ দিন পুর্বে ওই দম্পত্তি ঢাকায় কোন এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যায়। এর ২-৩ দিন পর তারা বাড়ি ফিরে আসে। এরপর থেকে তাদের জ্বর সর্দি কাশি গলা ব্যাথাসহ করোনা উপসর্গ দেখা দেয়। বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে তারা স্বামী স্ত্রী দুজনেই গোপনে স্থানীয় এক গ্রাম্য ডাক্তারের নিকট থেকে ঔষধ ক্রয় করে খেতে থাকে এবং বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার ভয়ে বাড়ির বাহিরে যাওয়া বন্ধ করে। কিন্তু এসব ঔষধ সেবনে সুস্থ না হয়ে গত কয়েকদিন যাবত তাদের করোনা উপসর্গ প্রকাশ পেতে থাকে।

এরপর স্থানীয়রা জানতে পারে ৮-১০ দিন হলো তারা গোপনে খাদাস বাজারের গ্রাম্য ডাক্তারের নিকট থেকে এসব উপসর্গের ঔষধ সেবন করছে। বিষয়টি গ্রামে জানাজানি হলে শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই দম্পতিকে দ্রুত ডাক্তারের কাছে সোপর্দ করার জন্য প্রতিবেশীরা চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা বিষয়টি স্থানীয় গোহাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি দ্রুত ওই দম্পতিকে করোনা উপসর্গ পরীক্ষাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য একজন গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে শাজাহানপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেন।

গ্রাম পুলিশ মন্টু মিয়া জানান, প্রথমে ওই দম্পতিকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক পাওয়া যায়নি। তবে দায়িত্বরত নার্স বলেছেন, এখানে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। এরপর দ্রুত তাদেরকে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসককে করোনা উপসর্গের কথাগুলো বললে কয়েক গজ দুর থেকেই প্রেসক্রিপশনে ঔষধ লিখে দেয় এবং ১৪ দিন বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেয়। বাড়িতে এসে ভুক্তভোগি স্বামী-স্ত্রী দুজনেই করোনা উপসর্গ জ্বর কাশি ও গলা ব্যাথা নিয়ে ঘরে অবস্থান করায় গ্রামের লোকজনের ভিতরে প্রতিবাদের ঝড় উঠে এবং কেন করোনা নমুনা পীক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি তার জন্য চেয়ারম্যানকে নালিশ করেন।

এ বিষয়ে গোহাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আতোয়ার তালুকদার ফজু বলেন, প্রাথমিকভাবে করোনা উপসর্গ থাকায় ও গ্রাম বাসির অনুরোধে নমুনা পরীক্ষার জন্য অত্র ইউনিয়নের একজন গ্রাম পুলিশকে দিয়ে তাদেরকে হাসপাতালে পাঠনো হয়। কিন্তু ডাক্তার ওই দম্পতির করোনা উপসর্গ পরীক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করাটা অত্যন্ত দুঃখজনক। শুধু তাই নয়, এই রোগির কারনে এলাকায় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে এর দায় দায়িত্ব কে নিবে?

এ বিষয়ে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের নিউরোলজি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মো. নাজমুল হক বলেন, রোগিকে করোনা উপসর্গ মনে হয়নি। তবুও ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দিয়েছি। তারপরও ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে, অবস্থা বেগতিক হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে ওই দম্পতি পরিবার পরিজনের সাথে বাড়িতে অবস্থানের কারনে ওই এলাকায় আতংক বিরাজ করছে।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button