করোনায় থেমে গেছে ধুনটের দেড় লক্ষ দিনমজুরের জীবন

বগুড়ার ধুনটে করোনায় মহামারী ঠেকাতে হাটবাজার বন্ধ করায় বিপাকে পরেছে দেড় লক্ষাধিক মানুষ। ২০০১ সালের আদমশুমারী অনুসারে ৯৬মাইল জনপথে ২লক্ষ ৬৬ হাজার মানুষের বসবাস। এ উপজেলাটি বগুড়া জেলা শেষ সীমানায় হওয়াই অধিকাংশই শ্রমজীবী। শ্রমজীবী ছাড়া দিনমজুর, দোকানী, দর্জি, সহ বিভিন্ন পেশার মানুষের বসবাস। করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারি ভাবে হাটবাজার বন্ধ রাখায় এসব মানুষ চরম বিপর্যায়ে পড়েছে। উপজেলায় সরকারি বেসরকারি ভাবে ত্রান দিলেও তা জনসংখ্যার তুলনায় অনেক কম।
উপজেলার মথুরাপুর বাজারে কাজ করে অতস সাহা। তিনি জানেন, ৪ সদস্যর পরিবার তার। বাবার দেওয়া ভিটাতে বসবা করে আসচ্ছে। তার জীবিকা নিবাহের জন্য পিয়াজু বিক্রি তার সম্ভব। কিন্তু বর্তমান করোনা মহামারী রোধে হাট বাজার বন্ধ করায়। বন্ধ হয়েছে রুজি রোজগার পথ। এতে ৪ সদস্যর পরিবার নিয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে তিনি।
উপজেলার মথুরাপুর বাজারের কাপর দোকানী মারুফ হোসেন। তিনি বলেন, তার কাপড় দোকানে দৈনিক প্রায় ৬০০- ৮০০ টাকার বেচা কেনি হতো। কিন্তু করোনার কারণে এখন ৬ ঘন্টা করে বেচা কেনি করছি এতে ২০০-৩০০ টাকা বেচা কেনি করছি। কিন্তু এ টাকা দিয়ে আমাদের চলা কষ্ট কর হয়েছে।
ভ্যানচালক বকুল হোসেন বলেন, পুরো দিন ভ্যান চালিয়ে করে পেতাম ৩০০-৪০০ টাকা কিন্তু এখন ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা পায়। দুর্দিন পার করছি এখন।
দর্জি মজনু তিনি জানান, আমি সারা দিন কাপড় সেলাই করে ৪০০-৫০০ টাকা উপার্জন করতে পারতাম। কিন্তু বর্তমান ২০০ টাকাও আয় করতে পারি না। করোনার কারণে সারা দিন ঘুরে বেড়ায়। এদিকে করোনায় নাপিতরাও দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। চা-বিক্রেতারাও কাটাচ্ছে মানবেতর জীবন।
এদিকে করোনাকে ঘিরে বিপাকে পড়েছে দুগ্ধ খামারিরা। করোনার আগে তারা কেজিতে ৪০-৪৫ টাকা বিক্রি করলেও এখন তারা কেজিতে ২০-২৫ টাকা বিক্রি করছে। এতে ক্ষতির মুখে রয়েছে দুগ্ধ খামারিরা।
উপজেলায় সবজি চাষিরা সবজি নিয়ে আছে চরম বিপাকে। করোনায় বিক্রি কম হওয়ায় ও ঢাকার পাইকার না থাকায় ক্ষেতেই পচে যাচ্ছে আবাদ কৃত ফসল
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিয়া সুলতানা জানান, উপজেলা প্রশাসন থেকে ৩০০ পরিবারকে ত্রান দেওয়া হয়েছে। আগামিতে প্রকল্প আসলে আরো দেওয়া হবে।
এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই খোকন জানান, উপজেলা পরিষদ থেকে প্রায় ৬০০ পরিবারকে সহযোগিতা করা হয়েছে। সরকারি বরাদ্দকৃত ২ লক্ষ টাকার শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। আর নিজ উদ্যোগে প্রায় ১৫০০ পরিবারকে সহযোগিতা করেছি। এবং ইউনিয়ন প্রতি সরকারি ৬ মেট্রিকটন চাল দেওয়া হয়েছে। উপজেলা পৌরসভার পক্ষ ১৫ মেট্রিক টন চাল থেকে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও এমপি হাবিবুর রহমানের পুত্র প্রকৌশলী আসিব ইকবাল সনি বলে, ব্যক্তিগক তহবিল থেকে উপজেলা ৬০০০ পরিবারকে সাহায্য হয়েছে। এবং আরো করা হবে।