করোনার দুর্যোগে থেমে যাচ্ছে নতুন উদ্যোক্তা
প্রতিটি সাধারন মানুষের অসাধারন হয়ে উঠার পথের বাঁকে থাকে ছোট ছোট অনেক গল্প। আর সেই গল্পটি থেকেই তৈরী হয় বিশ্বাস,পরিশ্রম, ধৈর্য্য এবং নানান সাহসিকতার মাধ্যমে ।
তেমনি জীবনের পথে নানান বাঁধা অতিক্রম করে ঘুরে দাড়ানোর স্বপ্ন নিয়ে নতুন এক পথ তৈরীতে দিন রাত পরিশ্রম করেন আবু সালেহ আহম্মেদ ও রুহুল আমিন। আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করে উঠে দাড়ানোর ইচ্ছে দু’জনের । কেননা সাফল্য তো তাদের কাছেই ধরা দেয় যারা থেমে গিয়েও পথের শেষ দেখতে এগিয়ে যায়।
ইউরোপীয়ান ইউনিভার্সিটিতে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ বিএসসিতে অধ্যায়নরত আবু সালেহ আহম্মেদ একজন তরুণ উদ্যোক্তা। যার পরিকল্পনা চাকরি করা নয় বরং চাকরি দেওয়া আর এই উৎসাহ নিয়ে শুরু করেছেন বিদেশি জাতের তরমুজ চাষ।
কিন্তু শুরুতেই যেন স্বপ্ন ভঙ্গের আভাস, করোনার ভয়াল থাবা যেন তার স্বপ্নকে পুরোপুরিভাবে ভেঙ্গে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত।
বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার জামাদারপুকুর হতে পশ্চিমে তিন কিলোমিটার পথ বেয়ে পালাহার গ্রামে আবু সালেহ আহমেদ ও সিঙ্গাপুর ফেরত রুহুল আমিন গড়ে তোলেন এক তরমুজ বাগান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ বছর ফেব্রুয়ারিতে ৫ বিঘা জমি লিজ নিয়ে শুরু করেছেন উন্নত জাতের তরমুজ চাষ। ভিন্নতার কারণে শুরু করে দুটি জাতের তরমুজ যার একটি তাইওয়ানের গোল্ডেন ক্রাউন ও অন্যটি ব্লাক বস ।
ব্লাক বস জাতের তরমুজ টি বাজারে দেখা গেলেও গোল্ডেন ক্রাউন জাতের তরমুজের দেখা কমই মিলেছে।
প্রশিক্ষণ ছাড়া অন্যের চাষ পদ্ধতি দেখে এবং ইউটিউবের পরামর্শে গড়ে তুলেছেন বিশাল একটি তরমুজ বাগান।
নেই কোন কৃষি অফিসের সহযোগিতা আর তাইতো এমন অভাবনীয় সাফল্যে অবাক এলাকাবাসীও। তার এমন একটি ব্যয়বহুল বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপনায় কৃষি অফিসের কোন কর্মকর্তার চোখেও পড়েনি এমনটিই জানান উদ্যোক্তা আবু সালেহ আহমেদ।
তবে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ফসল উৎপাদন শুরু করে ফলন ভালো হলেও করোনা দুর্যোগে সঠিক মূল্য না পাওয়ার চিন্তায় আবু সালেহ আহম্মেদ।
কারণ, সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও করোনা ভাইরাসের থাবা।
তিনি জানান, রমজান কে কেন্দ্র করে প্রতিটি গোল্ডেন ক্রাউন জাতের তরমুজ বিক্রি করা যেত ২০০-২২০ টাকা কেজি, এক একটা তরমুজের ওজন হয় সর্বোচ্চ আড়াই কেজি থেকে তিনকেজি। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারনে সারাদেশে লকডাউন চলছে এমন অবস্থায় কোন পাইকারী ব্যবসায়ী ক্রয় করতে রাজি হচ্ছে না। স্থানীয় পাইকারি ব্যবসায়ীদের নিম্ম মূল্যের প্রস্তাবে এ সম্পদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তরুণ এই উদ্যোক্তা।
জমি নেওয়া থেকে শুরু করে জমি প্রস্তুত, বীজ বপন ও অন্যান্য খরচে তার ব্যয় প্রায় ৪ লক্ষাধিক টাকার ও বেশি।
তবে কি থেমে যাবে তার এই এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন? দেশের এমন অবস্থায় যদি তরমুজ নিয়ে তাকে বিপাকে পরতেই হয় তাহলে পারবেন কি তার আগামীর স্বপ্ন গুলো বাস্তবায়ন করতে? এমন চিন্তার ছাপ নিয়েই যেন দিন পার করছেন শিক্ষাজীবনে থাকা এই তরুণ উদ্যোক্তা।তবে সফলতা অর্জনের পিছনে ছুটে চলা এই তরুন উদ্যোক্তা তার জীবনে এমন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চায় যেন শিক্ষিত সমাজ আস্তে আস্তে এমন উদ্যোগ নিতে এগিয়ে আসে