বগুড়ার সেই পলাতক করোনা পজিটিভ ব্যক্তির সন্ধান মিলেছে
বগুড়ার ফুলতলার সেই করোনা পজিটিভ ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। তিনি সদরের শেকেড়কোলা গ্রামে আত্মগোপন করেছিলেন। ঢাকার একটি ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ওই ব্যক্তি গত ১০ এপ্রিল তিনি বগুড়া শহরে ফুলতলা এলাকায় তার ভাড়া বাড়িতে আসেন। বগুড়া ডেপুটি সিভিল সার্জনের তথ্যমতে উক্ত ব্যক্তি জ্বর এবং কাশি থাকায় পরিবারের সদস্যদের চাপে গত ২৬ এপ্রিল তিনি নমুনা দেন। এরপর ২৮ এপ্রিল সন্ধ্যার একটু আগে ঘোষিত ফলাফলে তিনি করোনা পজিটিভ বলে চিহ্নিত হন। রিপোর্টের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনে বিষয়টি তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
হাসপাতালের রেকর্ডে ঐ রোগীর ঠিকানা শুধু ফুলতলা লেখা অনুযায়ী তার এলাকায় লকডাউন করতে গিয়ে স্থানীয় প্রশাসন পড়েছিলো বেশ বিপাকে। কারণ তার আসল বাড়িটি খুঁজে পাচ্ছিলেন না। পরবর্তীতে ব্যাপারটি জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে পুলিশ এবং স্বাস্থ্য বিভাগে জানাজানি হবার পর, দ্বায়িত্বরত কর্মীরা উক্ত রোগীকে বারবার খোঁজ করলেও মেলেনি তার সন্ধান। একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে পাওয়া যায়নি তাকে।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তার শহরের ফুলতলা এলাকার ভাড়া বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী এবং ১২ বছরের ছেলের সন্ধান পাওয়া যায় এবং সেই বাড়িসহ আশ-পাশের ৪টি বাড়িও লকডাউন করা হয়।
আজ রাতে বগুড়া সদর থানার এসআই সোহেল রানা তার ফেসবুকে সেই করোনা পজিটিভ রোগীকে খুঁজে পাওয়ার বর্ণনা দিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
এসআই সোহেল রানার দেয়া ফেসবুকের স্ট্যাটাস বগুড়া লাইভের পাঠকদের জন্য তা হুবহু তুলে ধরা হলো”
আজ আমি ডিউটি অফিসার। ওসি স্যার বিকালে সেই ফুলতোলা করোনা রোগীর সঠিক নাম ঠিকানা দিয়ে আমাকে রোগীকে খুঁজে বের করতে বললেন। আমি তাৎক্ষনিক খোঁজ নিলাম। সে নারায়নগঞ্জ জেলায় এরিস্টোফার্মা কোম্পানীতে চাকুরি করে। চাকরি থেকে কয়েকদিন আগে বগুড়া আসে। সে ফুলতোলা ভাড়া থাকে। সেখানকার ঠিকানায় চিকিৎসা নেয়। করোনা পরীক্ষা শেষে রেজাল্ট পজিটিভ। তারপর থেকেই সে পলাতক।
আমি এমদাদের ভাইয়ের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করলাম। সোর্স লাগালাম। সে বাড়িতেই ছিল। পুলিশ ভয়ে পলাতক। আমি অনুরোধ করি কথা বলতে।
আমার নম্বর পেয়ে এমদাদ আশ্বস্ত। সে আমার পূর্ব পরিচিত। একই সাথে অনেক কয়েকটা কাজ করেছি। আমাকে এবার সে নিজেই ফোন দিল। আমি আশ্বস্ত করলাম। ভয় নাই।
ওসি স্যার আমাকে বললেন তুমি যাও। তবে আমার কথা শুনে স্যার বললেন আমি ভয় পেয়েছি নাকি? ভয় পেলে একটা পিপিই ও গাউন শীট নিয়ে যাও। আমি স্যারের কথা শুনে লজ্জা পেয়ে বললাম ” স্যার! ভয় করে কাজ কি! কাজ তো আমাদেরই করতে হবে।”
আমি একা নয় কায়েসকেও একটা পিপিই দিতে চাইলাম। কিন্তু বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব এসএম বদিউজ্জামান স্যার যে পিপিই নিয়ে আসছিলেন তা সকল অফিসারকে দিয়ে প্রায় শেষের পথে। আমার পিপিই টা পাওয়ার পর কায়েসেরটা আর পাচ্ছিলাম না। অবশেষে অপর একটা প্যাকেটের তলায় থেকে খোঁজ পেলাম অপর একটা পিপিই। দুজন মিলে এলাকায় গেলাম। তারপর সবই ইতিহাস।
জানিনা আমাদের অবস্থা কি? আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আক্রান্ত ঐ রোগীকে তার নিজ বাসা শহরের ফুলতলায় রেখে লকডাউন করা হয়েছে। খবরটি নিশ্চিত করেছেন বগুড়া জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী।