অতি মারাত্মক ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ উপকূল অতিক্রম করছে
ঘূর্ণিঝড় আম্পান উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে, ইতোমধ্যে ঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলাগুলোতে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে। রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য অংশেও ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
খুলনা, সাতক্ষীরা, মোংলা ও সুন্দরবনের একাংশ দিয়ে দেশে ঢুকছে। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপের ওপর আম্পানের চোখ পরেছে বলে জানায় আবহাওয়া অধিদফতর। এটি বুধবার (২০ মে) সন্ধারাতের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপের পূর্ব পাশ দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্য দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে।
মোংলা ও পায়রা বন্দরে আগের মতোই ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোও ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, আম্পানের ব্যাস প্রায় ৫০০ কিলোমিটার। কেন্দ্রের ব্যাস প্রায় ১০০-১৫০ কিলোমিটার। তাই উপকূল অতিক্রমের সময় আম্পানের প্রভাব দুই দেশেই পড়বে সমানভাবে। তবে উপকূলে আছড়ে পড়ার পর সেখানে কিছু সময় অবস্থান করবে এবং ঝড়টি কিছুটা শক্তি হারাবে। সে সময় গতিবেগ হতে পারে ১৬০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ১৫-২০ ফুট জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে ভারতের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়, গতি বাড়িয়ে বাংলার আরও কাছে চলে এসেছে ‘অতি মারাত্মক’ ঘূর্ণিঝড় আম্পান। বেলা ১টায় আম্পানের অবস্থান ছিল দিঘা থেকে ৯৫ কিলোমিটার দূরে। সে সময় সাগরদ্বীপ থেকে ৯০ কিমি এবং পারাদ্বীপ থেকে ১৫০ কিমি দূরে ছিল এই ঘূর্ণিঝড়।
জলোচ্ছ্বাসের সতর্কতায় বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় এবং দ্বিতীয় পক্ষের চাঁদের সময়ের শেষ দিনের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে থেকে ১০ থেকে ১৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঝড়ো হাওয়ার সতর্কতায় বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলা সমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলতে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘন্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
জেলেদের জন্য সতর্কতায় বলা হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্ত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, যতই উপকূল থেকে উপরের দিকে যাবে ততই শক্তি কমে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।
আবহাওয়াবিদদের ধারনা, ঘূর্ণিঝড় অাম্পান সাগরদ্বীপ হয়ে সুন্দরবনে আছড়ে পড়তে পারে।