সারাদেশ

রাত কেটেছে আশ্রয় কেন্দ্রে সকালে বাড়ি ফিরে দেখে ঘর নেই

অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে উপকূলীয় নিম্নাঞ্চল। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অতিপ্রবল এ ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম শুরু করে গতকাল বিকাল ৪টার পর।উপকূল অতিক্রমের সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৬০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার।রাত ৮টার মধ্যে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, খুলনা অঞ্চল অতিক্রম করে আম্পান। এরপর বাতাসের গতিবেগ ক্রমান্বয়ে কমে আসে।

এটি ভারতের সাগরদ্বীপের পূর্বপাশ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম শুরু করে। এরপর বাংলাদেশের সুন্দরবন এলাকা দিয়ে পরবর্তী তিন থেকে চার ঘণ্টায় বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করে। আম্পানের প্রভাবে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরাঞ্চলে ১০ থেকে ১৫ ফুটেরও বেশি উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হয়েছে, যার ফলে প্লাবিতহয়েছে নিম্নাঞ্চল।জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙে মানুষের বাড়িঘরে পানি উঠেছে।

অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পান গতকাল সন্ধ্যায় দেশের সমুদ্র উপকূল অতিক্রম করেছে বলে জানান আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক। তিনি বলেন, সন্ধ্যার দিকে ঘূর্ণিঝড় আম্পান দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সুন্দরবন নিকটবর্তী উপকূল দিয়ে অতিক্রম করা শুরু করে।তবে এটি পেরিয়ে যেতে প্রায় ৩ ঘণ্টার মতো সময় নিয়েছে।

এদিকে আম্পানের প্রভাবে প্রচণ্ড ঢেউয়ে উপকূলীয়বিভিন্ন জেলায় বাঁধ ভেঙে গেছে।অনেক এলাকায় বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে পানি। রাত কেটেছে আশ্রয় কেন্দ্রে সকালে বাড়ি ফিরে দেখে ঘর নেই, রান্না ঘর বিলীন, হাড়ি পাতিল ভেসে গেছে। উঠানে কোমর ডোবানো পানি। দাড়ানোর মতো জায়গাও নেই।

রাত কেটেছে আশ্রয় কেন্দ্রে সকালে বাড়ি ফিরে দেখে ঘর নেই, রান্না ঘর বিলীন, হাড়ি পাতিল ভেসে গেছে। উঠানে কোমর ডোবানো পানি। দাড়ানোর মতো জায়গাও নেই। সাতক্ষীরার প্রতাপনগর, পদ্মপুকুর ও গাবুরা ইউনিয়নের অধিকাংশ জায়গায় এখন এই চিত্র। খর এই পরিস্থিতির জন্য বড় দায় নিতে হবে পানিউন্নয়ন বোর্ডকে। সারা বছর স্থানীয়রাই জোড়া তালি দিয়ে কোনরকম টিকিয়ে রাখে বাঁধ।

প্রতিটি ইউনিয়নে ৭ থেকে ৮টি জায়গা থেকে পানি ঢুকেছে। আসলে এসব জায়গায় গত কয়েকবছর ধরে বলতে গেলে বেড়ি বাঁধ না ছিল জমির আইল।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে,
ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ থেকে উপকূলীয় অঞ্চলের
মানুষকে রক্ষায় ১২ হাজার ৭৮টি আশ্রয়কেন্দ্র
প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ৫১ লাখ ৯০ হাজার ১৪৪ জন মানুষকে আশ্রয় দেয়ার সুযোগ ছিল।

‘আম্পান’ থাইল্যান্ডের দেয়া ঘূর্ণিঝড়ের নাম। প্রবল এই ঘূর্ণিঝড় সাতদিন ধরে বঙ্গোপসাগর থেকে শক্তি সঞ্চয় করে নিজেকে পরিণত করেছে।

সিয়াম সাদিক/বগুড়া লাইভ

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button