বগুড়া সদর উপজেলা

করোনাকালে ঘুঁড়িতে ঘুরেছে নূর ইসলামের ভাগ্যের চাকা




বগুড়া সদর উপজেলার মানিকচক এলাকার দিনমজুর নূর ইসলাম। স্কুল পরুয়া দুইছেলে, স্ত্রী সহ পরিবারে ৫ সদস্যের খাদ্যযোগান সংগ্রহ করতে হয় তাকে। পূর্বে চশমায় পাওয়ার তৈরির কাজ করে সংসার চালালেও বর্তমানে করোনার কারণে আয় রোজগার পথটিও তার বন্ধ।

জানা যায়, শখের বসে ঘুড়ি তৈরি করে আকাশে উড়ালে অনেকেই টাকার বিনিময়ে কিনতে চায়। এভাবে ২-৩ জনের কাছে ঘুড়ি বিক্রি করার পর ব্যাপক আকারে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। করোনার কারণে বগুড়ায় যখন লকডাউন তখন থেকেই ঘুড়ি তৈরি করে বিক্রি শুরু করেছেন তিনি।

এ পর্যন্ত তিনি ছোট বড় প্রায় ৪০০ ঘুড়ি তৈরি করে বিক্রি করেছেন। তিনি প্রতিদিন ৪-৫ টা ঘুড়ি তৈরি করতে পারেন। বৈশিষ্ঠ্য অনুসারে বিক্রি করেন ৩০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত।
এসব ঘুড়ি তৈরিতে বাঁশ, কাগজ, পলিথিন ইত্যাদি ব্যবহার করেন। এমনকি রাতে ওড়ানোর জন্যে ঘুড়িতে মোবাইলের ব্যাটারি দিয়ে লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। এই ঘুড়িগুলো রাতের আকাশে তারার মতো দেখায়।

করোনায় জনজীবন স্তব্ধ। ঘরবন্দী মানুষ। আয় রোজগারের পথও প্রায় বন্ধ। সংসারের দায়িত্বভার অসহায় দিনমজুর মানুষের উপর কঠোর ভাবে চেপে বসেছে। সংসার চালাতে নতুন নতুন পথ বেছে নিচ্ছেন অনেকেই। আর এই সময় সরেজমিনে দেখা যায় বগুড়া সদর উপজেলার মানিকচক বাজারে ঘুড়ির পশরা নিয়ে বসেছেন নূর ইসলাম ।



ঘুড়ি বিক্রেতা নূর ইসলাম বলেন, আয় রোজগারের পথ বন্ধ থাকায় বাড়িতে বসে থেকে কাটানোর চেয়ে ঘুড়ি তৈরি করে বিক্রি করে সংসারের প্রয়োজনীয় অভাব মেটানোর চেষ্টা করছি।

অঞ্চলভেদে এসব ঘুড়ির নাম দেওয়া হয়েছে গুড্ডি, চিলা,চং, থ্রি-পিচ গুড্ডি ইত্যাদি, বিমানের ন্যয় দেখতে তাই নাম দেওয়া হয়েছে বিমান গুড্ডি।
আর এসব কেনার জন্য ছোট বড় সকল বয়সী মানুষ ভীড় করছে মানিকচক বাজারের দোকান গুলোতে।

করোনার কারণে বাড়িতে অবস্থান করা অনেক তরুন-তরুণী, ছোট বড় সকলেই মেতে উঠেছেন ঘুড়ি উড়াতে। শৈশবের স্মৃতিকে মনে করার জন্য খোলা আকাশে মুক্ত পরিবেশে সুস্থ বিনোদনের জন্য ঘুড়ি উড়াচ্ছে তারা প্রায় প্রতিদিন।ঘর বন্ধী করোনার এই জীবনে প্রতিদিন বিকেলে এভাবেই সময় কাটাচ্ছেন অনেকেই।

ঘুড়ি উড়াতে আসা বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুলের সহকারী শিক্ষক মোঃ ইবনুল তাসরীফ বলেন, স্কুল বন্ধ থাকার কারণে বাড়িতে সময় কাটছে। তাই ঘুড়ি উড়িয়ে ছোট বেলার কথা মনে করছি সবসময়।খোলা আকাশে মুক্ত পরিবেশে ঘুড়ি উড়নো টা সুস্থ বিনোদন মনে করছি।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button