জাতীয়

দেশীয় মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করুন: প্রধানমন্ত্রী

২২ জুলাই বুধবার গণভবন লেকে পোনামাছ অবমুক্ত করে ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২০’ উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। এ উপলক্ষে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মৎস্য চাষে গতানুগতিক পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে এসে উন্নত ও আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণ করার মাধ্যমে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।দেশি ও আন্তর্জাতিক বাজারে মৎস্য সম্পদের চাহিদার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে প্রায় পৌনে পাঁচশ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ এবং ২৫০ প্রজাতির বেশি স্বাদুপানির মাছ রয়েছে।

এছাড়াও চিংড়ি, কাঁকড়া, শামুকসহ অসংখ্য মৎস্য সম্পদের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রচুর চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, মৎস্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগের ফলে একদিকে যেমন নতুন নতুন কর্মক্ষেত্রে সৃষ্টি হয় তেমনি সমৃদ্ধ হয় জাতীয় অর্থনীতি। মাছের উৎপাদন বাড়িয়ে দেশের জনগোষ্ঠীর শুধু পুষ্টি চাহিদা পূরণ নয়, ব্যাপক কর্মসংস্থান, বিদেশে মাছ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।

মৎস্য খাতের উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার এ খাতের গুরুত্ব উপলব্ধি করে দেশের মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও উৎপাদন বাড়াতে নানাবিধ কার্যকর ও ফলপ্রসূ পদক্ষেপ নিয়েছে। ফলে গত ১১ বছরে মাছের উৎপাদন ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

‘জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ২০২০ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী স্বাদুপানির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ এবার বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। দেশ আজ মৎস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বর্তমানে জনপ্রতি দৈনিক ৬০ গ্রাম চাহিদার বিপরীতে ৬২ দশমিক ৫৮ গ্রাম মাছ আমর গ্রহণ করছি। ’ মৎস্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ এর মধ্যেও মৎস্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট অন্য সংস্থার কর্মীরা ঝুঁকি নিয়ে মাছের উৎপাদন, বিপণন ও রপ্তানি অব্যাহত রেখেছে। দেশের স্বার্থে এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।

মৎস্যখাতের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা চাষের মাধ্যমে মাছের উৎপাদন বাড়াতে দেশবাসীকে অনুপ্রাণিত করতে ১৯৭৩ সালে গণভবনের লেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন। জাতির পিতা পাট, চামড়া, চা-এর সঙ্গে মাছকেও বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য হিসেবে উল্লেখ করেন। মৎস্য সম্পদ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় খাত বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন তিনি।

গণভবন লেকে পোনামাছ অবমুক্তকরণের সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শম রেজাউল করিম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।

এসময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকার গৃহীত নানামুখী পদক্ষেপ ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন। শ ম রেজাউল করিম বলেন, মৎস্য সেক্টরে গত ১১ বছরে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বাড়তি প্রায় ৬৫ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং বেড়েছে মৎস্য চাষি ও মৎস্যজীবীদের আয়। মা ইলিশ রক্ষা ও জাটকা নিধন রোধে কার্যকর কর্মসূচি নিয়েছি। জাটকা আহরণে বিরত রাখতে দরিদ্র জেলেদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া অব্যাহত রয়েছে। ফলে ইলিশের উৎপাদন ২০০৯ সাল থেকে দ্বিগুণ বেড়েছে।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button