বগুড়া মহাস্থান কুরবাণী হাটে এবারের রেকর্ড পরিমান ক্রেতা-বিক্রেতা
বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থান হাটে আজ ২৯ জুলাই ক্রেতাদের ভীড় ছিল চোখে পড়ার মত।শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কুরবানির পশুর হাট। এর আগে জেলার বিভিন্ন হাটে কুরবানী পশু ক্রয়-বিক্রয় করতে দেখা গেলেও মহাস্থান হাটে লোকসমাগম আজ রেকর্ড ছাড়িয়ে।
বুধবার মহাস্থান হাটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গরু, ছাগলের সাথে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং দালালের ভিড়ে হাটে পা ফেলার মুশকিল ছিল।আজ বুধবার সকাল থেকেই দূর-দূরন্ত জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে গরু-ছাগল নিয়ে বিক্রেতারা হাটে আসতে শুরু করেন। দুপুর থেকেই বৃহৎ মহাস্থানহাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণা ও বেচাকেনাতে মুখরিত হয়ে ওঠে হাট প্রাঙ্গণ। ছাগলের চেয়ে অবশ্য গরুর সংখ্যাই বেশি দেখা গেছে। ইতিপূর্বে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে দর-কষাকষির চিত্র বেশি দেখা গেলেও শেষ হাটে তা খুব একটা বেশি দেখা যায়নি। নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে পশু কেনাবেচার চেষ্টা করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। ক্রেতারা দেখে-শুনে পছন্দের গরুটির দরদাম করছেন। পছন্দ হলে ন্যায্য দামে কিনে খুশিমনে পশু নিয়ে বাড়ি ফিরছেন।
তবে মহামারি করোনা প্রতিরোধে মহাস্থান গরু-ছাগলের হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা বৃদ্ধির জন্য আগে থেকেই হাটের প্রবেশদ্বারে স্থাপন করা হয়েছে হাত ধোয়ার বেসিন এবং শিবগঞ্জ থানা পুলিশ ফ্রিতে বিতরন করেছে মাস্ক। ঈদের খুশিতে ক্রেতা ও বিক্রেতারা মাঝে তেমন করোনা ভাইরাস এর,মনে করতে দেখাই যায়নি। তবে হাট কমিটি ও প্রশাসন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য বার বার মাইকিংসহ প্রচারণা চালানো হয়েছে।
হাটে ক্রেতারা বলেন, ব্যাপক গরু-ছাগল আমদানি হয়েছে। দাম নাগালের মধ্যে হওয়ায় পছন্দসই কোরবানির পশু কিনতে পারছেন তারা।
বিক্রেতাদের দাবি, করোনা হামাকেরেক ম্যারা ফ্যালা দিছে ভাই। তারপরেও বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীসহ কোরবানি করতে ইচ্ছুক ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন মহাস্থানহাটে। হাটের চারপাশ ঘুরে দেখা যায়, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ছিলো লক্ষণীয়। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নিয়েছে হাট কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসন। পুলিশের পক্ষ থেকে জাল বা নকল টাকা শনাক্ত করণ মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। সাদা পোশাকে নজরদারি রেখেছেন তারা। ফলে সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা।
মহাস্থানহাটের ইজারাদার রায়নগর ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফি’র সাথে কথা বললে তিনি জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাটে পশু ক্রয়-বিক্রয় করা কঠিন ব্যাপার। তার পরেও সরকারি আদেশ মেনে হাটের প্রবেশ মুখে হাত ধোওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জীবাণুমুক্ত করার জন্য স্যানেটাইজার স্প্রে করা হচ্ছে। হাটে প্রাণি সম্পদ বিভাগ ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতিনিধিরা কাজ করছেন। হাটের বাড়তি নিরাপত্তায় বসানো হয়েছে ৮টি সিসি ক্যামেরা। সুস্থ্য পশু নিশ্চিত করতে হাটে মেডিকেল টিম বসানো হয়েছে। ক্রেতারা প্রয়োজন মনে করলে স্টরওয়েড বা হরমোন পরীক্ষার জন্য মেডিকেল টিমের সহায়তা নিতে পারছেন।
শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম বদিউজ্জান জানান, পবিত্র কুরবানি আযহা উপলক্ষ্যে মহাস্থান হাটে ক্রেতা-বিক্রেতারা যাতে নির্বিঘ্নে পশু ক্রয়-বিক্রয় করতে পারে সেজন্য পুলিশ কন্ট্রোল রুম স্থাপন ও সাদা পোশাকে প্রায় ১০জন নজরদারীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও বাড়তি ফোর্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জ্বাল টাকা শনাক্ত করার মেশিনও স্থাপন করা হয়েছে। সড়কে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না বলেই আশা করছি।